নিজস্ব প্রতিবেদক : লেনদেন খরা কাটছে না দেশের পুঁজিবাজারে। সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবসে গতকাল সোমবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল আগের কার্যদিবসের তুলনায় ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৫৪ দশমিক ৮৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৬১ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১২ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ২১ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৬০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৮টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৪৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৩০০টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৫৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১১৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৮০টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল তিনটি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৬৫টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৫টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র দুটি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৫টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিন শেষে অপরিবর্তিত ছিল ১৮টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১৪ কোটি ৭৩ লাখ ৯৩ হাজার ৬১৪টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৬৯ হাজার ৯২৯ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জের ধরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়িয়েছে ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৪৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা।
লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠান হলো: সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মনোস্পুল, খান ব্রাদার্স পিপি, সিভিও পিআরএল, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, মিডল্যান্ড ব্যাংক এবং প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
দরবৃদ্ধির শীর্ষে থাকা ১০ প্রতিষ্ঠান: ন্যাশনাল টিউবস, সিএপিএম বিডিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড-১, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ইউসিবি, আইএসএন লিমিটেড, সোনালী আঁশ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফনিক্স ফাইন্যান্স, ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, সিভিও পিআরএল, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস ও সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ।
দরপতনের শীর্ষ ১০ কোম্পানি: ফারইস্ট ফাইন্যান্স, প্রিমিয়ার লিজিং, তমিজুদ্দিন টেক্সটাইল, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এস আলম কোল্ড রোল্ড, আইএফআইএল ইসলামিক মিউচুয়াল ফান্ড-১, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, রেনউইক যজ্ঞেশ্বর, গোল্ডেন সন ও ট্রাস্ট ইসলামি লাইফ ইন্স্যুরেন্স।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সিএসসিএক্স সূচক আগের দিনের চেয়ে ৪৯ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৮ হাজার ৭৭৬ পয়েন্টে। সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৮৭ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট কমে ১৪ হাজার ২২৫ পয়েন্টে, শরিয়াহ সূচক ২ দশমিক ১৬ পয়েন্ট কমে ৮৯৬ পয়েন্টে এবং সিএসই ৩০ সূচক ৪ দশমিক ২৫ পয়েন্ট কমে ১২ হাজার ৬৬৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সিএসইতে মোট ১৯৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৪২টি কোম্পানির, কমেছে ১২৬টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৫টির।
সিএসইতে ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬ কোটি ৫১ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, আজকের এই বিপুল সংখ্যক কোম্পানির দরপতন বাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, যেখানে লেনদেনও ৫০০ কোটি টাকার বেশি রয়েছে।
সামনে বাজারের এই ইতিবাচক ধারা বজায় থাকে কিনা, সেদিকেই নজর থাকবে সবার।
প্রিন্ট করুন







Discussion about this post