প্রতিনিধি, রাজবাড়ী : রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার মুক্তি মহিলা সমিতির একটি নির্মাণাধীন ঘরের ভেতরে বালি চাপা দেয়া সোহান শেখ (২০) নামে এক তরুণের লাশ উদ্ধারের তিন দিন পরে হত্যার সঙ্গে জড়িত দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়ালন্দ থানা পুলিশ। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই কিশোরকে গ্রেপ্তার করে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহƒত ধারালো অস্ত্র ও নিহতের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। নিহত সোহান শেখ গোয়ালন্দের সিদ্দিক কাজী পাড়ার আল আমিন শেখের ছেলে। গত সোমবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান গোয়ালন্দ ঘাট থানার (ওসি) স্বপন কুমার মজুমদার।
গ্রে প্তারকৃতরা হলো রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার শামসু মাস্টার পাড়া গ্রামের মো. শহিদ সেখের ছেলে মো. নিরব সেখ (১৭), শাহাদৎ মেম্বার পাড়া গ্রামের মো. মাদার কাজীর ছেলে মো. হায়াত কাজী (১৭)।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে পুলিশ জানায়, ঘটনার ১৫ দিন আগে সোহান শেখের সঙ্গে ওই দুই আসামির মারামারি হয়। এরপরই তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আসামিরা। গত ১৬ মার্চ রাতে মাদক সেবনের কথা বলে সোহানকে দৌলতদিয়ার মুক্তি মহিলা সমিতির নির্মাণাধীন ঘরে ডেকে নেয়া হয়। সেখানে তাকে প্রথমে কাঠের বাটাম ও ইট দিয়ে আঘাত করে দুই আসামি। পরে ধারালো চাকু দিয়ে সোহানের বুকে আঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এরপর তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ গুমের উদ্দেশ্যে বালিচাপা দিয়ে পালিয়ে যায় আসামিরা। পরদিন সকালে স্থানীদের খবর পেয়ে থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
এরপর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে মাঠে নামে পুলিশ। সোর্স ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৮ মার্চ ভোরে রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মহেন্দ্রপুর এলাকা থেকে নিহত সোহানের ব্যবহƒত মোবাইলফোন ও এক অভিযুক্তের কাপড়চোপড়সহ একটি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যায়। পরে অভিযান চালিয়ে রোববার গভীর রাতে কালুখালীর হরিণবাড়ীয়া এলাকা থেকে দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে তাদের দেখানো তথ্যমতে, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহƒত চাকু ও আরেক আসামির রক্তমাখা শার্ট উদ্ধার করা হয়। পরে আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, গত ১৬ মার্চ সকাল ১০টায় দৌলতদিয়া মুক্তি মহিলা সমিতির নির্মাণাধীন ঘর থেকে বালিচাপা অবস্থায় নিহত সোহানের লাশ উদ্ধার করে গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশ। এ ঘটনার পর নিহতের চাচা সেলিম শেখ বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় মানুষকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা করেন।