শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ব্রিটেনের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হয়েছে দশমিক ছয় শতাংশ। এর আগে দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ ওই সময় প্রত্যাশার তুলনায় ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে দেশটির। খবর বিবিসি।
ব্রিটেনের অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক (ওএনএস) জানিয়েছে, ব্যবসা ও আর্থিক খাতগুলো পূর্বাভাসের তুলনায় বেশি সক্রিয় ছিল। তৃতীয় প্রান্তিকের এ প্রবৃদ্ধি ভোক্তা চাহিদাকে শক্তিশালী করবে বলেও জানায় সংস্থাটি।
চলতি বছরের প্রথম ও দ্বিতীয় প্রান্তিকে ব্রিটেনের প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসের চেয়ে কম ছিল। প্রথম প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল দশমিক তিন শতাংশ, যেখানে পূর্বাভাস ছিল দশমিক চার শতাংশের। আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি ছিল দশমিক ছয় শতাংশ। এটিরও পূর্বাভাস দশমিক সাত শতাংশের নিচে।
ক্যাপিটাল ইকোনমিকসের অর্থনীতি বিশ্লেষক রাথ গ্রেগরি বলেন, এ উপাত্ত বিশ্লেষণ করে বোঝা যায়, জুনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের বেরিয়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিট ভোটের পর দেশটির অর্থনীতিতে সামান্য প্রভাব পড়েছে। আশা করা হচ্ছে, সবশেষ প্রান্তিকে ব্রিটেনের প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক হবে।
তিনি বলেন, তৃতীয় প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধি দশমিক পাঁচ শতাংশ থেকে দশমিক ছয় শতাংশ হয়েছে এবং দ্বিতীয় প্রান্তিকেও এ চিত্র ছিল নিয়ন্ত্রণে। ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের অর্থনীতি গতি হারায়নি।
ওএনএসের তথ্যমতে, সেবা খাত ব্রিটেনের অর্থনীতিতে ৪০ শতাংশ অবদান রাখে। অক্টোবরে আগের মাসের তুলনায় এ খাতে দশমিক তিন শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ওএনএসের পরিসংখ্যানবিদ ড্যারেন মরগ্যান বলেন, ভোক্তা চাহিদা শক্তিশালী হওয়ায় এটি তৃতীয় প্রান্তিকে ব্রিটেনের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। প্রথমে যেটা প্রত্যাশা করা হয়েছিল, তার চেয়ে প্রবৃদ্ধি অনেক ভালো হয়েছে। আর্থিক খাতের কার্যক্রম তুলনামূলক ভালো হওয়ায়, এটিও প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, অক্টোবরে সেবা খাতের শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি এবং খুচরা বিক্রি বেড়ে যাওয়া প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ।
ইওয়াই আইটেম ক্লাবের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মার্টিন বেক বলেন, বড়দিনের আগে অর্থনীতির এ ধরনের খবর খুবই ইতিবাচক। তিনি বলেন, ভোক্তা চাহিদা কতদিন স্থায়ী হবে, সেটা দেখার বিষয়। মূল্যস্ফীতির কারণে ভোক্তা খরচ কমার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
ওএনএসের পৃথক এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, তৃতীয় প্রান্তিকে ব্রিটেনের চলতি হিসাবে ঘাটতি বেড়েছে। ব্রেক্সিটের পর পাউন্ড স্টার্লিংয়ের দরপতনে রফতানি বেড়ে যাওয়ায় এ ঘাটতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ওই সময় চলতি হিসাব ঘাটতি বেড়ে ২৫ দশমিক ৪৯৪ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছে।
আগের প্রান্তিকে এটি ছিল ২২ দশমিক ০৭৯ বিলিয়ন। অর্থাৎ জিডিপির ৫ দশমিক ২ শতাংশ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ২০১৩ সালের পর এটিই সর্বোচ্চ। তখন ঘাটতি ছিল ৬ শতাংশ।