শেয়ার বিজ ডেস্ক : কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নির নেতৃত্বাধীন সরকার তার প্রথম বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছে। কার্নি বলেছেন, এটি কানাডার অর্থনীতির সংকট মোকাবিলা করবে। বিশেষ করে এটি যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত শুল্কের ‘জবাব’ দেবে। অটোয়া থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
চলতি বছর রাজনীতিতে প্রবেশের আগে কানাডা ও ইংল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেতৃত্ব দেয়া কার্নি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারণে মার্কিন সম্পর্কের নজিরবিহীন অবনতির মধ্য দিয়ে কানাডার নেতা হিসেবে নিজেকে আদর্শ ব্যক্তি হিসেবে তুলে ধরেন।
ট্রাম্পের শুল্ক কানাডাকে মারাত্মকভাবে আঘাত করেছে। এটি দেশটির বেকারত্ব বাড়িয়েছে এবং গাড়ি, অ্যালুমিনিয়াম ও ইস্পাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতগুলোয় ব্যবসা সংকুচিত করেছে।
তার লিবারেল সরকার বলছে, বাজেট কানাডার মুখোমুখি নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা মোকাবিলা করবে। অর্থমন্ত্রী সংসদে বাজেট উন্মোচন না করা পর্যন্ত ব্যয় পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট বিবরণ গোপন রাখা হচ্ছে।
আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে থাকবে ন্যাটো লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করার জন্য প্রতিরক্ষা ব্যয়ে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ‘ভাঙনের’ কারণে জাতীয় প্রকল্পেও তহবিল বরাদ্দ করা হবে। কার্নি এই প্রকল্পগুলোকে কানাডার অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্বের চাবিকাঠি বলে উল্লেখ করেছেন।
বন্দর সমপ্রসারণ থেকে শুরু করে জ্বালানি উৎপাদন ও প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে গুরুত্বপূর্ণ খনিজ উত্তোলন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো পর্যন্ত এর অন্তর্ভুক্তও রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া-ফিলিপ শ্যাম্পেন যে পদক্ষেপগুলো উপস্থাপন করবেন সেগুলোকে ‘বিনিয়োগ বাজেট’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ধারণাটি আগামীকালের কানাডা গড়ে তুলবে।
এপ্রিল মাসে পূর্ণ মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার আগে জানুয়ারিতে জাস্টিন ট্রুডোর স্থলাভিষিক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত কার্নি, কানাডিয়ানদের ধারাবাহিকভাবে সতর্ক করে দিয়েছেন যে মার্কিন-কানাডা সম্পর্কে ট্রাম্প-যুগের অবনতি ক্ষণস্থায়ী নয়।
তিনি এই সপ্তাহের শেষে বলেন, বাজেটটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আমাদের নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে। তবে তিনি উল্লেখ করেছেন যে এই ধরনের পরিবর্তন ‘রাতারাতি ঘটতে পারে না’।
এর আগে গত অক্টোবর মাসে কানাডা থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই শুল্ক এর আগে আরোপিত শুল্কের সঙ্গে যুক্ত হবে। ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘তারা এখন যা দিচ্ছে, তার ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ হলো।’
প্রসঙ্গত, ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্কনীতির বিরোধিতা করলেও কানাডা এখনও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন কোনো বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র কানাডার সব পণ্যের ওপর গড়ে ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে, যদিও বিদ্যমান মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির কারণে অনেক পণ্য এই শুল্কমুক্ত তালিকায় রয়েছে।
এ ছাড়া ধাতুতে ৫০ শতাংশ এবং অটোমোবাইল খাতে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানো হয়েছে। আর ট্রাম্পের নতুন ঘোষণায় এই শুল্কের ওপর আরও ১০ শতাংশ পয়েন্ট যোগ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। মূলত কানাডার মোট রপ্তানির তিন-চতুর্থাংশই যুক্তরাষ্ট্রে যায় এবং দেশটির অটোমোবাইল শিল্পের বড় অংশই অবস্থিত অন্টারিও প্রদেশে।
প্রিন্ট করুন






Discussion about this post