প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

ফরিদপুরে পুলিশে চাকরি পেলেন ৭৩ জন

প্রতিনিধি, ফরিদপুর :‘চাকরি নয়, সেবা’ এই সেøাগানে শতভাগ মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে ফরিদপুরে পুলিশের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পেয়েছেন ৭৩ জন। এই চাকরি পেতে একেক জনের আবেদন করতে লেগেছিল মাত্র ১২০ টাকা। তবে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পাওয়া ৭৩ পুলিশ সদস্যের অনলাইনে আবেদন ফি বাবদ নেয়া ১২০ টাকা ফেরত প্রদান করেন পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান।

কোনো প্রকার হয়রানি, সুপারিশ ও ঘুষ ছাড়া পুলিশের গর্বিত সদস্য হতে পেরে খুশিতে আত্মহারা হতদরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারের এসব তরুণ-তরুণী। গতকাল শনিবার দুপুরে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে গত বুধবার রাতে ফরিদপুর পুলিশ লাইন্স ড্রিল শেডে পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান ট্রেইনি পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন। এতে ৬২ পুরুষ ও ১১ নারী প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় জেলা পুলিশ।

এমন স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বিনা মূল্যে চাকরি পেয়ে উচ্ছ্বসিত হতদরিদ্র পরিবারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছেলে অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, ‘বাবা দিনমজুরের কাজ করে আমাদের তিন ভাইকে পড়ালেখা শিখিয়েছেন। এখন তার বয়স হয়েছে, আগের মতো কাজ করতে পারেন না। টিউশনি করিয়ে পড়ালেখা চালিয়ে নিচ্ছিলাম, কিন্তু পরিবারের হাল ধরার অবস্থা ছিল না। আজকে আমি সরকারি চাকরি পেয়েছি, আমি মনে করছি আমার নড়বড়ে পরিবারের একটা খুঁটি মজবুত হলো। কখনও ভাবিনি ঘুষ ছাড়াই এমন সোনার হরিণ ধরা দেবে।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ও ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি মো. শাহজাহান, নিয়োগ বোর্ডের সদস্য গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সাখাওয়াত হোসেন ও নিয়োগ বোর্ডের অপর সদস্য রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইফতেখারুজ্জামান।

এ ব্যাপারে ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, ‘পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের নির্দেশনায় ও ঢাকা রেঞ্জের তত্ত্বাবধানে শতভাগ স্বচ্ছভাবে আমরা ৭৩ জনকে নিয়োগ দিয়েছি। তারা প্রত্যেকেই নিজ যোগ্যতায় চূড়ান্ত পরীক্ষা দিয়ে এ পর্যন্ত এসেছে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে স্মার্ট সিটিজেন দরকার। তাই আমরা স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্মার্ট ছেলে-মেয়েদের নিয়োগ দিয়েছি। তারা প্রত্যেকেই স্মার্ট পুলিশ সদস্য হয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে ভূমিকা রাখবে বলে আশা রাখি।

উল্লেখ্য, ফরিদপুর জেলার ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) ৭৩ জনের শূন্য পদের বিপরীতে মোট দুই হাজার ৫০০ প্রার্থী অংশ নেন। সেখান থেকে প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং শেষে এক হাজার ৮০০ প্রার্থী শারীরিক মাপ ও শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান। এখান থেকে বাদ পড়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন ৭১৬ জন। তাদের মধ্যে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১৬২ প্রার্থী। তাদের মধ্যে মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে ৭৩ জনকে মনোনীত করে নিয়োগ বোর্ড।