মো. রজব আলী, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর): দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে দিন দিন বেড়ে চলছে রেলওয়ে টিকিট কালোবাজারি চক্রের দৌরাত্ম্য। টিকিট কাউন্টারে গিয়ে টিকিট না পাওয়া গেলেও পাওয়া যাচ্ছে চা-স্টল ও পানের দোকানে। এসব টিকিট কালোবাজারিদের মদত দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ফুলবাড়ী রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টার মাস্টার এনায়েতুল্লাহর বিরুদ্ধে।
সম্প্রতি কালোবাজারে টিকিট দেয়ার অভিযোগ এনে কাউন্টার মাস্টার এনায়েতুল্লাহর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রিয়াজ উদ্দিন বলেন, তিনি রেলস্টেশনে অভিযান চালিয়ে টিকিট কালোবাজারির অপরাধে কয়েকজনকে জরিমানা করেছেন। আবারও অভিযান করবেন বলে তিনি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা পৌর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা সবুজ বলেন, টিকিট মাস্টার এনায়েতুল্লাহ বিভিন্ন মানুষের নামে টিকিট প্রিন্ট করে তার সহযোগীদের কাছে বিক্রির জন্য কালোবাজারে দিয়ে দেয়। এ কারণে সাধারণ যাত্রীরা কাউন্টারে এসে টিকিট পান না এবং হয়রানির শিকার হন। তিনি ও এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর দিয়ে টিকিট মাস্টার এনায়েতুল্লাহর বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করেছেন।
এদিকে টিকিট মাস্টার এনায়েতুল্লাহ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, যারা চা-স্টল ও পানের দোকানে টিকিট বিক্রি করে, তারা টিকিট কাউন্টারের লাইনে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন মানুষের নামে টিকিট সংগ্রহ করে। ফলে যারা লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে আসেন, আমরা তাদের টিকিট দিই।
জানা গেছে, ফুলবাড়ী উপজেলাটি যোগাযোগের ক্ষেত্রে দিনাজপুর জেলার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। এ উপজেলা শহরের কোলঘেঁষে রয়েছে বিরামপুর, নবাবগঞ্জ ও পার্বতীপুর উপজেলার বৃহৎ এলাকা। এছাড়া ফুলবাড়ী রেলওয়ে স্টেশনের সন্নিকটে সরকারের বৃহৎ প্রতিষ্ঠান বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি, বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র, মধ্যপাড়া পাথরখনি ও উত্তরাঞ্চলের বৃহৎ বিনোদন কেন্দ্র স্বপ্নপুরীর অবস্থান। এ অঞ্চলের যাতায়াতকারী যাত্রীরা ফুলবাড়ী রেলস্টেশন দিয়ে যাতায়াত করে থাকেন। এ কারণে ফুলবাড়ী রেলস্টেশনটিতে সারাবছর যাত্রীদের ভিড় জমে থাকে। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে কতিপয় অসাধু ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন রেলওয়ে টিকিট কালোবাজারির রমরমা ব্যবসা। এতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সাধারণ রেলযাত্রীরা।
স্থানীয় বাসিন্দা ও রেলভ্রমণকারীরা টিকিট কালোবাজারি রোধে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।