নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের তিন পরিচালকের সব শেয়ার কেনার অনুমোদন পেয়েছে মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেড। সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) তিন পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়টি অনুমোদন দিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, ফু-ওয়াং ফুডস লিমিটেডের তিন পরিচালকের সব শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে নতুন করে কোম্পানিটির মালিকানায় আসছে মিনোরি বাংলাদেশ লিমিটেড। আর ফু-ওয়াং ফুডসের ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২৬টি শেয়ার মিনোরি বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তরের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে বিএসইসি। বিএসইসির ৮০৮তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ অনুমোদন দেয়া হয়। কোম্পানিটির তিন পরিচালকের মধ্যে যথাক্রমে আরিফ আহমেদ চৌধুরী ৩৯ লাখ ৮২ হাজার ৭২৬ শেয়ার, আফসানা তারান্নুম ২২ লাখ ৩০ হাজার এবং লুবাবা তাবাসসুম ২২ লাখ ৩০ হাজার বিক্রি করছেন। শেয়ার ক্রয় চুক্তি অনুসারে প্রতিটি শেয়ার ১০টাকা মূল্যে মিনোরি বাংলাদেশের কাছে বিক্রি করবেন তারা। স্টক এক্সচেঞ্জের লেনদেন পদ্ধতির বাইরে এই শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এর আগে মিনোরি বাংলাদেশ তালিকাভুক্ত আরেক কোম্পানি এমারাল্ড অয়েলের মালিকানা কিনেছে এবং চার বছর ধরে বন্ধ থাকা এমারাল্ড অয়েলকে উৎপাদনে ফিরিয়ে এনেছে মিনোরি বাংলাদেশ।
এদিকে ফু-ওয়াং ফুডসের তিন পরিচালকের শেয়ার হস্তান্তরের বিষয়ে মিনোরি বাংলাদেশসহ সংশ্লিষ্ট বেশকিছু প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছে বিএসইসি। এতে শেয়ার হস্তান্তরের অনুমোদনের পাশাপাশি শেয়ার হস্তান্তর প্রক্রিয়ায় পাঁচটি শর্ত দিয়েছে বিএসইসি। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছেÑবিক্রেতা (শেয়ারহোল্ডার পরিচালক) এবং ক্রেতা এই বিষয়ে প্রযোজ্য উৎসে কর জমা দেয়ার জন্য স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকা প্রবিধানের রেগুলেশন ৩৪(১) অনুযায়ী ঘোষণা দেবেন। মিনোরি বাংলাদেশের নামে প্রস্তাবিত শেয়ার হস্তান্তরের কার্য সম্পাদনের পর পরিচালকদের দ্বারা শেয়ারের নিরবচ্ছিন্ন হোল্ডিং বজায় রাখতে ফু-ওয়াং ফুডসের পরিচালনা পর্ষদে স্থানান্তরিত সাত দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ারের বিপরীতে এক বা তার বেশি ব্যক্তিকে মনোনীত বা প্রতিনিধি পরিচালক হিসাবে মনোনীত করবেন। ক্রেতা মিনোরি বাংলাদেশ ফু-ওয়াং ফুডসের দায়বদ্ধতা নিয়মিতকরণ এবং কোম্পানিটির সুষ্ঠু পরিচালনা ও পরিচালনার জন্য কমপক্ষে ২০ কোটি টাকা শেয়ার মানি ডিপোজিট রাখবে। আর শেয়ার মানি ডিপোজিটের অর্থ কোম্পানিটির নামে একটি পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখতে হবে এবং শুধু ব্যাংকের দায়বদ্ধতা নিয়মিত করণ, জমি অধিগ্রহণ, কার্যকরী মূলধন ও উৎপাদন সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে এ অর্থ ব্যবহার করা যাবে। আর ফু-ওয়াং ফুডসের পরিচালনা পর্ষদের দ্বারা ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণের শর্ত পূরণের জন্য শেয়ার মানি ডিপোজিটের শেয়ারের অর্থের বিপরীতে মূলধন বাড়ানোর জন্য কমিশনের সম্মতি নিতে হবে।
২০০০ সালে পুঁজিবাজারে আসা ‘বি’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ১৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১১০ কোটি ৮৩ লাখ ৯০ হাজার টাকা। রিজার্ভে আছে ২০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি আট লাখ ৩৯ হাজার ২৮৪টি। মোট শেয়ারের মধ্যে আট দশমিক ৭৫ শতাংশ উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের হাতে, আট দশমিক ৩৩ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক, শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে এবং ৮২ দশমিক ৪৭ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর হাতে।
সম্প্রতি প্রকাশিত চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানা গেছে, কোম্পানিটির এ প্রান্তিকে ইপিএস কমেছে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ছয় পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল সাত পয়সা। অর্থাৎ, ইপিএস কমেছে এক পয়সা। ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৬৬ পয়সা। আর প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ১০ পয়সা।
এর আগে ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে ইপিএস হয়েছে পাঁচ পয়সা এবং ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১১ টাকা ৮৫ পয়সা। এই হিসাববছরে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৩৬ পয়সা।