আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান: বান্দরবানে অভিনব কৌশলে পাহাড় কেটে জায়গা বিক্রি করা হচ্ছে। অন্য স্থানের ভুয়া কাগজ দেখিয়ে জেলা শহরের লেমুঝিরি এলাকায় সাইনবোর্ড লাগিয়ে অনুমোদন ছাড়াই পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যু বাবুল বিশ্বাসের বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, বান্দরবান পৌরসভার দুই নাম্বার ওয়ার্ডের রোয়াংছড়ি বাসস্টেশনের পার্শ্ববর্তী লেমুঝিরি রাস্তার পাশে শ্রমিক দিয়ে পাহাড় কাটছে ভূমিদস্যু বাবুল বিশ্বাস। পরিবেশ অধিদপ্তর এবং প্রশাসনের কোনো অনুমোদন ছাড়াই ইতোমধ্যে পাহাড়ের বিশাল অংশ কেটে সীমানা পিলার দিয়ে একাধিক প্লট তৈরি করে বিক্রিও করেছেন। প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিতে রাস্তার সামনের মুখটি ঠিকঠাক রেখে ভেতরের দিকে আস্তে আস্তে পাহাড় কেটে সমান করে চলেছেন। অভিনব কৌশল করে পাহাড় কাটার পর ঝাড় জঙ্গল এবং গাছের শেকড় পোড়ানো হয় পাহাড় কাটার চিহ্নগুলো লুকাতে। এমনকি পাহাড় কাটা জায়গায় ছোট ছোট গাছ লাগিয়ে দিয়ে জায়গাটিকে পুরোনো জমি বোঝানোর অপচেষ্টায়ও লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
নাম না প্রকাশের শর্তে ক’জন অভিযোগ করে বলেন, পাহাড় কাটার পর তড়িঘড়ি করে টিনের একটি ঘরও নির্মাণ করেছেন পাহাড় কাটা জায়গায়। অন্য স্থানের আরেকটি ভুয়া কাগজ দেখিয়ে ৪০ শতকের মতো সরকারি খাস জমি দখল করে পাহাড় কেটে জায়গাটি সমান করা হচ্ছে। ভূমিদস্যু বাবুল বিশ্বাসের সাইনবোর্ড লাগানো জমির কাগজের সঙ্গে দখলি জায়গার কাগজের কোনো মিল নেই। সার্ভেয়ার থেকে মেনেজ করে বিরোধপূর্ণ এবং সরকারি খাস জমি দখল করে জমির ব্যবসা করে এ ভূমিদস্যু।
শ্রমিক এমং স্থানীয় মারমারা বলেন, জায়গাটি বাবুল বিশ্বাসের। চারপাশে বাউন্ডারি দেয়াল দেয়া হবে। তাই পাহাড়ের কিছু কিছু অংশটা কাটা হচ্ছে। তবে ভূমিদস্যু বাবুল বিশ্বাস বলেন, পাহাড় কাটতে কার কাছ থেকে অনুমোদন নেব? কে অনুমোদন দেবে?। আপনারা সবাই একটু সহযোগিতা করুন। একটা ঘর তৈরি করব থাকার জন্য। জায়গাটি দখল করিনি, একজনের কাছ থেকে কিনে নিয়েছি।
পরিবেশ অধিদপ্তর বান্দরবানের উপপরিচালক ফখরুল উদ্দিন চৌধুরী বলেন, পাহাড় কাটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অনুমোদন ছাড়া পাহাড় কাটার অভিযোগ পেয়েছি। বাবুল বিশ্বাস নামে কাউকে পাহাড় কাটার কোনো অনুমোদন দেয়া হয়নি। তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজিয়া আফরোজ বলেন, পাহাড় কাটার কোনো অনুমোদন নেই। প্রশাসন থেকে ঘর করতে কাউকে পাহাড় কাটতে অনুমোদনও দেয়া হয় না। পাহাড় কাটার প্রমাণ পেলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।