প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

বান্দরবানে পাহাড়ের ছড়া ও খালে বালি উত্তোলনের মহোৎসব

আলাউদ্দিন শাহরিয়ার, বান্দরবান : বান্দরবানে পাহাড়ের ছড়া ও খালে বালি উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। ইটভাটায় ব্যবহার এবং নিচু জমি ভরাটের জন্য অবৈধভাবে এক্সকাভেটর ও শ্রমিক দিয়ে বালি উত্তোলন করে ট্রাকযোগে বিক্রি করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। আর বালি উত্তোলনে স্থানীয় হেডম্যান সহায়তা করছেন। সূয়ালক মৌজার হেডম্যানের বিরুদ্ধে ট্রাকপ্রতি এক হাজার টাকা করে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়রা জানান, বান্দরবান সদর উপজেলার সূয়ালক ইউনিয়নের আমতলী আমবাগান এলাকা, বঙ্গপাড়া, গেসমনি পাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি পয়েন্টে অবৈধভাবে সূয়ালক খাল এবং পাহাড়ি ছড়া থেকে এক্সকাভেটর ও শ্রমিক দিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। পরিবেশ ধ্বংস করে উত্তোলন করা বালি ট্রাকযোগে ইটভাটা ও নিচু জমি ভরাটের কাজে বিক্রি করছে সংঘবদ্ধ একটি চক্র। বালি উত্তোলনের কারণে বঙ্গপাড়া রাস্তাসহ আশপাশের এলাকায় খালে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এ ভাঙনের ঝুঁকির মুখে পড়েছে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি।

স্থানীয় সূয়ালক মৌজার হেডম্যানের বিরুদ্ধে বালি উত্তোলনকারী চক্রের কাছ থেকে প্রতি ট্রাক বালিতে এক হাজার টাকা করে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইটভাটার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য বালির প্রয়োজন। বালির চাহিদা মেটাতে সূয়ালক খাল-ছড়া থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। জায়গাটি সূয়ালক হেডম্যানের দাবি করে হেডম্যান প্রতি ট্রাক বালিতে এক হাজার টাকা করে নিচ্ছেন।

তিনি বলেন, হেডম্যানের অনুমতিতে বালি তোলা হচ্ছে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সূয়ালক মৌজার হেডম্যান মংথোয়াই চিং বলেন, ইটভাটার লোকজন খাল থেকে বালি উত্তোলন করছেন। জায়গা নষ্ট না করে বালি উত্তোলন করলে আমার কোনো সমস্যা নেই বলে জানিয়েছি। তবে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়ার বিষয়টি সত্য নয়।

সূয়ালক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান উক্যনু মারমা বলেন, সূয়ালক খালের বিভিন্ন জায়গা থেকেই বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। ইটভাটার মালিক ও স্থানীয় একটি চক্র পাহাড়ের ছড়া-খাল থেকে বালি উত্তোলন করে ট্রাকে ট্রাকে নিয়ে যাচ্ছে। বালি উত্তোলনের কারণে খালের ভাঙনে ইউনিয়নের বঙ্গপাড়া রাস্তাসহ আশপাশের এলাকাগুলোয় ভাঙন দেখা দিয়েছে। হুমকিতে পড়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। পরিবেশ রক্ষায় ছড়া-খাল থেকে বালি উত্তোলন বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।

সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাজিয়া আফরোজ বলেন, বান্দরবান সদর উপজেলায় ইজারা দেয়া প্রশাসনের কোনো বালিমহাল নেই। পরিবেশ রক্ষায় পাহাড়ের ছড়া-খাল থেকে বালি উত্তোলন করা অপরাধ। বিষয়টি তদন্ত করে পরিবেশবিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।