প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

বিশ্বকাপ উপলক্ষে কাতারে খুচরা ব্যবসায়ীদের বিক্রি বেড়েছে

Doha at blue hour

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ফিফা বিশ্বকাপ কাতার-২০২২ ঘিরে কাতারের খুচরা ব্যবসায়ীদের বিক্রি বেড়েছে। দেশটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের ব্যবসায়ীদের খুচরা বিক্রি বেড়ে যাওয়ার কারণে সঠিক প্রবৃদ্ধিতে থাকা অর্থনীতি আরও উপকৃত হচ্ছে। খবর: দ্য পেনিনসুলা কাতার।

বিশ্বকাপ উপলক্ষে বিদেশ থেকে আগত ভক্তদের কারণে খুচরা বিক্রেতাদের পণ্যের বিক্রি বেড়েছে। এ কারণে ক্ষুদ্র খুচরা বিক্রেতারা আশা করছেন, তাদের জন্য সুদিন অপেক্ষা করছে। আসছে দিনগুলোয় ও সপ্তাহগুলোয় আরও বিক্রির আশা তাদের।

বর্তমানে রাজধানীর দোহার বেশিরভাগ খুচরা ও মুদি আউটলেটগুলোর পাশাপাশি মলগুলোয় বিক্রির চাপ বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে ফুটবল বিশ্বকাপের উদ্বোধন হওয়ার পর থেকে এ পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

তবে অনেক বিক্রেতার মতে, কেনাকাটা এখনও জমে ওঠেনি। আশানুরূপ বাড়েনি বিক্রি। তবে আসছে দিনগুলোয় ও সপ্তাহগুলোয় ভালো বিক্রির প্রত্যাশা দোহার এক খুচরা ব্যবসায়ীর। তিনি বলেন, ব্যাংকিং কার্যক্রমের সঙ্গে মিল রেখে বাড়ছে বিক্রি।

বেশিরভাগ খুচরা স্টোরের মালিকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে বিক্রির পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ শতাংশের মধ্যে রয়েছে, যা বিশ্বকাপের সময় প্রত্যাশার তুলনায় কম। তবে মৌসুমের শুরু হিসেবে বিক্রি সন্তোষজনক পর্যায়ে রয়েছে, যা দেশের সব খাতে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশের সব খাতের ব্যবসার জন্য এ ধারা সুখবর বয়ে আনবে বলে দাবি তাদের।

নতুন দোকান খোলা, অধিগ্রহণ ও ই-কমার্স কাতারের খুচরা শিল্পের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলে এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। একত্রীকরণ ও অধিগ্রহণ কার্যক্রমের ফলে ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলের সম্প্রসারণ হয়েছে এবং এতে কাতারের খুচরা বাজারের কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে।

অপরদিকে, ক্রমবর্ধমান ভোক্তা সচেতনতা, প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি, প্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) প্রচলন এবং চিরায়ত পদ্ধতির বাইরে বিপণনের খরচ বাজারের প্রবৃদ্ধিতে চ্যালেঞ্জ রাখছে বলে শঙ্কা বিক্রেতাদের। কাতারের খুচরা বাজার দেশটির অর্থনীতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে, যা ২০৩০ ভিশনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

গ্লোবাল ক্রেডিট রেটিং (ঋণমান নির্ণয়কারী) সংস্থা ফিচ সল্যুশন্সের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, চলতি বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে কাতারের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) হবে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। দেশকে টেকসই উন্নত জ্ঞান অর্থনীতিতে রূপান্তর করতে অর্থনীতির বহুমুখীকরণে বা বৈচিত্র্য আনয়নে কাজ করছে কর্তৃপক্ষ।

মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে কাতারের অর্থনীতি ভীষণ শক্তিশালী। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি (জিডিপি) ধরে রেখেছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি বেড়েছে ১২ শতাংশ। কাতারজুড়ে খুচরা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বাড়িয়ে চলেছে এবং ই-কমার্সের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়িয়ে চলেছে।

অক্সফোর্ড বিজনেস গ্রুপ পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, কভিড-১৯ মহামারির কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়লেও কাতারের খুচরা খাত একচেটিয়া ব্যবসা করেছে। ২০২০ সালের বসন্তে বেশ কয়েকটি শপিং আউটলেট বন্ধ করে দেয়া হলেও গ্রীষ্মের শুরুতে তা খুলে দেয় দেশটির সরকার। এর পরের মাসগুলোয় কাতারের সরকার খুচরা দোকান ও মলগুলো বিভিন্ন স্বাস্থ্য নির্দেশিকাসহ গ্রাহকদের স্বাগত জানায়।

২০২১ সালে মুষ্টিমেয় কিছু নতুন মল খোলা হয় এবং ২০২২ সালে মল খোলার সংখ্যা বেড়ে যায়। কভিড বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর মানুষের মধ্যে কেনাকাটার আগ্রহ বেড়ে যায়। বিশেষ করে মুদিপণ্য ক্রেতারা, যারা মহামারির সময় অনলাইনে কেনাকাটা করতেন তারা সরাসরি কেনাকাটা শুরু করেন। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ে দেশটির অর্থনীতিতে। অভ্যন্তরীণ ঘোরাফেরা বেড়ে যায়। এসব কারণে দেশটির জনপ্রিয় স্থানগুলো খুচরা ব্যবসায়ীদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দেয়, তাদের বিক্রি বাড়তে থাকে। এছাড়া দোকানগুলোর ওপর থেকে করহার কমিয়ে দেয় দেশটির সরকার। উপরন্তু বিশ্বকাপের কারণে রমরমা হতে শুরু করে এ খাতটি। আসছে দিনগুলোয় তারা পর্যাপ্ত ক্রেতাসমাগম ও বিক্রির আশা করছেন। বিশেষ করে বিদেশি ক্রেতাদের কাছে তাদের পণ্যের চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।