প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

বিশ্ব ঐতিহ্য থেকে বাদ পড়ার আশঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র’ বন রক্ষায় বাংলাদেশের করা কাজে সন্তুষ্ট না হওয়ায় সুন্দরবনকে ইউনেস্কোর ‘বিপদাপন্ন ঐতিহ্য’র তালিকাভুক্তির সুপারিশ করেছে। এর ফলে বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারে সুন্দরবন। এ তথ্য জানিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও মানবাধিকার কর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। লিখিত বক্তব্যে সুলতানা কামাল বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এর আগের দু’বছরে সুন্দরবন রক্ষায় তাদের করা কাজের বিষয়ে একটি প্রতিবেদন ইউনেস্কোর কাছে পেশ করেছে। প্রতিবেদনটি একটি অপ্রকাশিত ও গোপন দলিল। সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটির একটি কপির জন্য আবেদন করা হলেও এখনও তা পাওয়া যায়নি।’
তিনি বলেন, “গণমাধ্যম সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি বাংলাদেশের প্রতিবেদন পাওয়ার পর ইউনেস্কো ‘বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রের’ পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সুন্দরবন বিষয়ে একটি সুপারিশ প্রস্তুত করেছে, যা ‘বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির’ সভায় পেশ করা হবে। এ বিষয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র বন রক্ষায় বাংলাদেশের কাজে সন্তুষ্ট না হওয়ায় সুন্দরবনকে ইউনেস্কোর ‘বিপদাপন্ন ঐতিহ্যের’ তালিকাভুক্তির জন্য সুপারিশ করেছে। সুন্দরবন বিষয়ে এই সুপারিশ যদি কমিটি চূড়ান্ত হিসেবে গ্রহণ করে, তাহলে সুন্দরবন তার বর্তমান ঐতিহ্যের সম্মান হারাবে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার নির্বিকার হলে তার ওপর চাপ প্রয়োগের লক্ষ্যে বনকে ‘বিপদাপন্ন হিসেবে তালিকাভুক্ত’ করার ইউনেস্কোর একটি পদ্ধতি রয়েছে, সুন্দরবন বিষয়ে তারা সেটি গ্রহণ করার চেষ্টা করছে। সুন্দরবন ও আশেপাশের এলাকায় তথা সারা দেশের পরিবেশ সংরক্ষণে বৃহত্তর বিবেচনায় আমরা মনে করি, ইউনেস্কো কেন্দ্র সঠিকভাবেই তাদের এই প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে। সরকার যেহেতু সুন্দরবন ও পরিবেশের প্রতি যত্নশীল নয়, সেক্ষেত্রে বন রক্ষায় আমরা ইউনেস্কোর এই পদক্ষেপকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করছি।”
রামপালসহ সব প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে সুলতানা কামাল বলেন, ‘রামপাল ও বনবিধ্বংসী সব বিষয়ে সরকারের সব সিদ্ধান্তই বিজ্ঞানবিরোধী ও অযৌক্তিক। রাজনৈতিক বিবেচনা থেকেই এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হচ্ছে। সরকারি এ ধরনের আচরণ আজ সুন্দরবন ও বাংলাদেশের জন্য লজ্জাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। আমরা চাই সরকার তার ভুল অবস্থান থেকে সরে এসে রামপাল প্রকল্প বাতিল করুক, বনবিরোধী সব স্থাপনা উৎখাত করুক এবং বনের প্রাকৃতিক চরিত্রকে সংরক্ষণ ও বন সমৃদ্ধকরণের সঠিক পদক্ষেপ নিক।’
সংবাদ সম্মেলনে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য-সচিব ড. মো. আবদুল মতিন, সদস্য এবিএম শামসুল হুদা ও রুহিন হোসেন প্রিন্স উপস্থিত ছিলেন।