শতরঞ্জি। নামের সঙ্গেই রয়েছে বাঙালিয়ানার ছোঁয়া। তাদের স্লোগানের সঙ্গেও রয়েছে সেই ছাপ ‘আমি বাংলার মুখ দেখিয়াছি’।
রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটি গড়ে উঠেছে নব্বইয়ের দশকে। শতরঞ্জির পণ্য উৎপাদন হয় পাট, উল ও তুলার পাশাপাশি প্রায় সব রকমের ওয়েস্টেজ বা আবর্জনা দিয়ে। রংপুরে রয়েছে এর পাঁচটি কারখানা। সেখানে কাজ করছেন প্রায় ছয় হাজার কর্মী, যাদের ৮৫ ভাগই নারী। রাজধানীর শুক্রাবাদে রয়েছে তাদের শোরুম। উৎপাদিত পণ্যের মধ্যে রয়েছে মাদুর, কার্পেট, পাপোশ ও বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ।
আবর্জনাও যে শিল্প হতে পারে, তা দেখতে যেতে হবে শতরঞ্জিতে। ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার জিপি-১৫ নম্বর প্যাভিলিয়নে গিয়ে দেখতে পাবেন অন্যরকম এক সাজ। সামনে ইটের দেয়ালে পানির ফোয়ারা ও মাটির হাঁড়ির মধ্যে বৃক্ষসজ্জা স্বাগতম জানাবে আপনাকে। শহরে বসে পাবেন ভিনগাঁয়ের ছোঁয়া। আড়াই হাজার বর্গফুটের প্যাভিলিয়নে স্থান পেয়েছে নানা রকম পণ্য।
প্যাভিলিয়নে কথা হয় শতরঞ্জির পরিচালক মিথিলার সঙ্গে। তিনি জানান, ১৯৯১ সালে শতরঞ্জি তৈরির উদ্যোগ নেন তার বাবা শফিকুল আলম সেলিম। নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির বিবিএর শিক্ষার্থী মিথিলা জানান, বাবার শৈল্পিক চিন্তার ফসল এ শতরঞ্জি। প্রতিষ্ঠানটি এখন দেশি বাজারের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করছে। বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশে রফতানি হয় তাদের পণ্য।
শতরঞ্জির ব্যবস্থাপক আশিকুর রহমান রুমি জানান, রংপুর অঞ্চলের আবহমান নানা রূপসজ্জা ফুটিয়ে তোলা হয় শতরঞ্জির নানা পণ্যের ওপর। পণ্যের নামে রয়েছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া। যেমন লাটাই, পিলপা, হাতিপায়া, চাঁদতারা, পাগলা-পাগলি প্রভৃতি। নামগুলো নেওয়া হয়েছে রংপুরের বিভিন্ন লোককথা থেকে। প্যাভিলিয়নকর্মীরা বলেন, আবর্জনা থেকে তৈরি হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় ফ্লোরম্যাট-বেনিম্যাটসহ নানা পণ্য।
মেলা উপলক্ষে প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন পণ্যে মূল্যছাড় দিচ্ছে। সব ধরনের পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় রয়েছে। একটি ডোরম্যাট কিনলে আরেকটি ফ্রি দেওয়া হচ্ছে। ব্যাগে দেওয়া হচ্ছে ১০ শতাংশ ছাড়। প্লেস ম্যাটের ওপর ছাড় আছে ৪০ শতাংশ। ১২০ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে একেকটি বাথম্যাট পাওয়া যাচ্ছে। এর দুটি কিনলে সঙ্গে পাবেন তিনটি ফ্রি বাথম্যাট। মূলত বাণিজ্যমেলাকে প্রচারের জায়গা হিসেবে বিবেচনা করছেন শতরঞ্জির পরিচালক মিথিলা।