প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

মাগুরার পাদুকাশিল্পে পুঁজি সহায়তা জোগান

 

মাগুরায় জুতা তৈরির সিংহভাগ কারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার যে খবর গতকালের শেয়ার বিজে প্রকাশ হয়েছে, তা দুঃখজনক। এতে সংশ্লিষ্টদের জীবিকা ও জীবনেই শুধু বিপর্যয় নেমে আসেনি,  সেখানে একটি সম্ভাবনাময় শিল্পের অপমৃত্যুও হতে চলেছে। আরও উদ্বেগের কারণ, জীবিকা অনিশ্চয়তার মুখে পড়ায় দেশ ত্যাগ করে প্রতিবেশী ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন কেউ কেউ। মাগুরার পাদুকাশিল্পের অবস্থা যে কতটা সংকটাপন্ন, তা উপলব্ধির জন্য এ বাস্তবতা বিবেচনাই যথেষ্ট।

জানা যাচ্ছে, মাগুরায় এ শিল্পের এমন অবস্থা সৃষ্টির মূলে রয়েছে পুঁজি সংকট। ভালো পৃষ্ঠপোষক পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। বরং চড়া সুদে মহাজনি ঋণ নিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন কেউ কেউ। ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পকে উৎসাহিত করতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে। এ অবস্থায় মাগুরার পাদুকাশিল্পে নিয়োজিতরা কেন সুবিধাবঞ্চিত থেকে যাচ্ছেন, সে প্রশ্নও আমরা তুলতে চাই। এক জুতা দোকানের মালিক আমাদের প্রতিবেদকের কাছে বলেছেন, দাম বেশি হলেও ওখানকার তৈরি জুতার মান ভালো। সন্দেহ নেই, দেশের রুচিশীল ও সচেতন ক্রেতারা মান যাচাইয়েও দক্ষ হয়ে উঠছেন ক্রমে। সেদিক বিবেচনায় এ শিল্পকে ‘সম্ভাবনাময়’ বলা চলে। স্বভাবতই প্রশ্ন জাগে, এ শিল্পের সম্ভাবনা কি ওই এলাকার ব্যাংক ও অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের অজানা? আমাদের ধারণা, ওখানকার আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি পুঁজি সহায়তা জোগাতে এগিয়ে আসে, তাহলে এ সমস্যার সমাধান অনেকটাই সম্ভব। মাগুরায় তৈরি জুতার চাহিদা বিদেশেও রয়েছে, সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। অনেকের জানা, প্রতিবেশী ভারতেও একসময় বাজার ছিল এখানকার তৈরি জুতার। সেই বাজারে এখন কী পরিমাণ জুতা রফতানি হচ্ছে, তা অবশ্য আমাদের অজানা। পরিস্থিতির পরিবর্তনে কিছুটা নেতিবাচক অবস্থা যে বিরাজ করছে, তা ধারণা করা যায় স্বভাবতই। আমরা চাইবো, ওখানকার পাদুকাশিল্পে নিয়োজিতরা যেন বর্তমান চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে জুতা উৎপাদন করতে পারেন, সেজন্য তাদের উপযুক্ত পুঁজি সহায়তা জোগানো হোক। সময়ের সঙ্গে মানুষের চাহিদায় পরিবর্তন আসে, বদলায় রুচি। হাল ফ্যাশন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টরা যেন জুতা উৎপাদন করতে পারেন, সেজন্য তাদের দেওয়া হোক প্রশিক্ষণ। জুতা তৈরির কাঁচামালও যেন তারা নির্বিঘ্নে পান, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ আশা করি। ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশে এ জুতার বাজার পাওয়া সম্ভব কি না, তাও খুঁজে দেখতে বলবো সংশ্লিষ্টদের। আমরা চাই, মাগুরার পাদুকাশিল্প তার হারানো গৌরব ফিরে পাক। ওখানকার শ্রমিকদের মুখে ফুটে উঠুক হাসি।