প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

মুঠোফোন-ল্যাপটপের ব্যবহারবিধি

কভিডকালে মুঠোফোন ও ল্যাপটপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে; সঙ্গে টেলিভিশনের দর্শকও। এগুলো একটানা ব্যবহারে চোখের সমস্যা এবং ঘাড়, পিঠ ও কোমরে ব্যথা হয়। এসব শারীরিক জটিলতার প্রধান কারণ হলো প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহারে সঠিক পন্থা মেনে না চলা।

ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের দিকে একটানা তাকিয়ে থাকলে চোখের পেশিগুলো ক্রমাগত সংকুচিত বা প্রসারিত হতে থাকে। ফলে ছোট-বড় সবারই চোখে শুষ্কতা, ব্যথা, লাল হওয়া বা পানি পড়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি কম বয়সে চোখে গ্লুকোমা হতে পারে। আমরা সাধারণত মাথা ও ঘাড় সামনের দিকে ঝুঁকে মুঠোফোন ও কম্পিউটার ব্যবহার করি। এমন অভ্যাসে ঘাড়ের পেশিতে টান পড়ে এবং ব্যথা শুরু হয়। অনেকের ক্ষেত্রে শিরদাঁড়া ও কোমরেও মারাত্মক ব্যথা হতে পারে।

যে হাত দিয়ে মুঠোফোন ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই দিকের কাঁধ ও হাতেও ব্যথা হয়। এসব ক্ষেত্রে সার্ভাইক্যাল সিøপ ডিস্কের প্রবণতা বেড়ে যায়। আবার মুঠোফোন ও ল্যাপটপ বেশি ব্যবহারে কবজিতে কার্পাল টানেল সিনড্রোম বা বিশেষ ধরনের নার্ভের সমস্যা হয়। অতিরিক্ত মুঠোফোন ব্যবহার থেকে বুড়ো আঙুলে ব্যথা, ঝিনঝিন করাসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া রাতে ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত মুঠোফোন-ল্যাপটপ ব্যবহার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। ফলে অনিদ্রা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

যা মেনে চলবেন: শরীরের পেশিগুলো সচল রাখুন। প্রতিদিন ৩০-৩৫ মিনিট ব্যায়াম করুন। শলভাসন, ভুজঙ্গাসন, পবন মুক্তাসন যোগব্যায়ামে কোমরের ব্যথা এড়ানো যেতে পারে। তবে কোমর ব্যথায় ভোগা ব্যক্তিদের অবশ্যই এসব ব্যায়াম করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।

রাতে ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে প্রযুক্তিপণ্য ব্যবহার বন্ধ করুন। এ সময়টায় বই পড়ুন, হালকা আমেজের গান বা যন্ত্রসংগীত শুনতে পারেন।

অনেকেই বিছানায় বসে বা শুয়ে ল্যাপটপে কাজ করেন। এতে নানা ধরনের ব্যথা বাড়ার আশঙ্কা থাকে। চেয়ার-টেবিলে বসে ল্যাপটপ ব্যবহার করুন।

কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের দিকে একটানা ২০ মিনিটের বেশি তাকাবেন না। ২০ মিনিট পর অন্তত ২০ সেকেন্ড চোখ বন্ধ রাখুন অথবা ২০ ফুট দূরে ২০ সেকেন্ড দৃষ্টি রাখুন। তারপর আবার স্ক্রিনে চোখ রাখুন। পাশাপাশি কৃত্রিম টিয়ার ড্রপ ব্যবহার করলেও চোখ আরাম পায়। দিনে তিন-চারবার এ ধরনের ড্রপ দেয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ঘণ্টাখানেক পর চেয়ার ছেড়ে উঠে পায়চারি করুন।

অধ্যাপক সৈয়দ এ কে আজাদ

চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

আল-রাজী হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা