নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রয়লার মুরগির কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়ে গেলেও ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান মন্তব্য করেন, এ দাম ২০০ টাকার বেশি হওয়ার যুক্তি নেই। গতকাল বুধবার রাজধানীর নিউ মার্কেটের বনলতা মার্কেট কাঁচাবাজার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পোলট্রি খাত-সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা এবং নিজস্ব পর্যবেক্ষণের ওপর ভিত্তি করে ডিএনসিআরপি মহাপরিচালক বলেন, ‘ব্রয়লার মুরগি নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তর কাজ করেছে। আমাদের পর্যবেক্ষণ হলো, ব্রয়লার মুরগির দাম ভোক্তা পর্যায়ে কেজিতে ২০০ টাকার বেশি হওয়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই। রমজান উপলক্ষে বাজার তদারকির অংশ হিসেবে বনলতায় যান সফিকুজ্জামান। তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী সমিতির নেতারাও। তাদের একজন বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বাজার নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনে মুরগি আমদানির পরামর্শ দেন।’
তিনি বলেন, ‘ডাল, ছোলাসহ অনেক পণ্যের দাম কমেছে, বেড়েছে শুধুই ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম। কোনোভাবেই এক কেজি মুরগির দাম ২৫০ থেকে ৩০০ হতে পারে না। তাও যদি হয় তাহলে সরকারকে বলব পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে মুরগি আমদানি শুরু করতে।’
রোজায় নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে সাধারণের মধ্যে যে উৎকণ্ঠা, তাও উঠে আসে ডিএনসিআরপি মহাপরিচালকের বক্তব্যে। তিনি বলেন, ‘বাজারে পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। আমি ভোক্তাদের বলব, আপনারা আতঙ্কিত হবেন না। পণ্য আছে, পণ্যের কোনো ঘাটতি নেই। এবার রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে যাতে ব্যবসায়ীরা কারসাজি করতে না পারে, সেজন্য বাজার কমিটিগুলোকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারপরও দেশের কোনো বাজারে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ে যদি অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, তাহলে এর জন্য বাজার কমিটি দায়ী থাকবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
‘পণ্য কিনি প্রয়োজনে, মূল্য রাখি নিয়ন্ত্রণে’ এ সেøাগান স্মরণ করিয়ে দিয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ‘আপনারা বাজরে হুমড়ি খেয়ে পড়বেন না। আপনারা প্রয়োজনে তিন দিন বা সাত দিনের পণ্যে একসঙ্গে ক্রয় করেন। একসঙ্গে ক্রয় করে বাজারকে অস্থির করবেন না।’
বাজার নিয়ে সরকারকে আটটি পরামর্শ দেয়ার কথাও জানিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘যারা দায়িত্বশীল আছেন, তারা ভোক্তাদের কষ্ট লাঘবের জন্য বিষয়টি দেখবেন সেই প্রত্যাশা করব।’
ব্যবসায়ীদের এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরীও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম বেশি নিলে বাজার কমিটিগুলোকে তাদের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। তারা এই নিয়ন্ত্রণটুকু করতে না পারলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বাজার কমিটি বাতিল করে দেবে। ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান থাকবে এবার রমজানে ভোক্তা যেন একটু স্বস্তিতে থাকে।’
বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘রমজান এলেই ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার অপবাদ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আছে। আমরা এবার এফবিসিসিআই, ভোক্তা অধিদপ্তর, দোকান মালিক সমিতি, বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবার রমজানে পণ্যের দাম বাড়ার কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।’