নিজস্ব প্রতিবেদক: তালিকাভুক্ত দুই কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার কোনো সঙ্গত কারণ নেই। এগুলো হলো কেঅ্যান্ডকিউ লিমিটেড ও মালেক স্পিনিং মিলস লিমিটেড। এ কোম্পানিগুলোর অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে এমনটিই জানায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই)।
সূত্রমতে, অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিস পাঠায়। কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ জানায়।
জানা যায়, মালেক স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শেয়ারদর গত মাসের ২১ তারিখ থেকে ক্রমেই বেড়েছে, যা গতকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ২১ টাকা ১০ পয়সায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে চার টাকা ৮০ পয়সা। আর এ দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই।
কেঅ্যান্ডকিউর শেয়ারদর গত মাসের ২৬ তারিখ থেকে শেয়ারদর ক্রমেই বেড়েছে, যা গতদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৩২ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ টাকা ৬০ পয়সায়। এ সময়ের মধ্যে কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে ১১ টাকা ৫০ পয়সা। আর এ দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসসি।
উল্লেখ্য, তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি মালেক স্পিনিং মিলস লিমিটেডের ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরে বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৫২ পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৪৫ টাকা ১৫ পয়সা। কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ২৯ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার টাকা।
২০১৫ সালের সমাপ্ত হিসাববছরে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে, যা আগের বছর থেকে দুই শতাংশ বেশি। ওই বছর ইপিএস হয়েছিল দুই টাকা পাঁচ পয়সা এবং এনএভি ছিল ৪৪ টাকা ৮৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল যথাক্রমে দুই টাকা ৩৩ পয়সা ও ৪৫ টাকা ছয় পয়সা। কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল ৩৯ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যা আগের বছর ছিল ৪৫ কোটি চার লাখ ৬০ হাজার টাকা। চলতি হিসাববছরে প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইপিএস হয়েছিল ২০ পয়সা। এটি আগের বছরের একই সময় ছিল ৩২ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস কমেছে ১২ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত সময়ে এনএভি ছিল ৪৫ টাকা ৩৫ পয়সা। এটি একই বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ছিল ৪৫ টাকা ১৫ পয়সা।
ওই সময় কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল তিন কোটি ৯১ লাখ ৮০ হাজার টাকা।
৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৯৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৫৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
গতকাল কোম্পানিটির ৪৩ লাখ ৪৬ হাজার ৪১৪টি শেয়ার মোট এক হাজার ২৯৭ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৯ কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা। শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের চেয়ে পাঁচ দশমিক ৫৩ শতাংশ বা এক টাকা ১০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২১ টাকায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ২১ টাকা ১০ পয়সা। শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২০ টাকা ২০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২১ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ১৫ টাকা থেকে ২১ টাকা ৫০ পয়সায় ওঠানামা করে।
কোম্পানিটির মোট ১৯ কোটি ৩৬ লাখ শেয়ার রয়েছে।
ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৪৩ দশমিক শূন্য পাঁচ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীর কাছে তিন দশমিক ৪৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ২৩ দশমিক ৭২ শতাংশ শেয়ার।
কেঅ্যান্ডকিউ ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত সমাপ্ত ১৮ মাসের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ‘নো ডিভিডেন্ড’ ঘোষণা করেছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে দুই পয়সা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্যে লোকসান হয়েছে ১১ টাকা ৪৯ পয়সা।
গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯ দশমিক ৭৭ শতাংশ বা তিন টাকা ৯০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৪৩ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ৪৩ টাকা ৬০ পয়সা। দিনজুড়ে কোম্পানিটির ৬৭ হাজার ৭৮৬টি শেয়ার মোট ১৪৫ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২৯ লাখ ৫১ হাজার টাকা। শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৩৬ টাকা ২০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪৩ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ১৫ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ৪৩ টাকা ৮০ পয়সায় ওঠানামা করে।