প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

মেয়াদ-ব্যয় বাড়ল ই-পাসপোর্ট প্রকল্পের

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন প্রকল্পের অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। গতকাল বুধবার কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের জানান, আজকের সভায় মোট ১৫টি এজেন্ডা ছিল, যার সব পাস হয়েছে। তার মধ্যে আটটি নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের। বিদ্যুতের দুটি, বাণিজ্যে দুটি। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের একটি করে।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় বেড়েছে ৮৮ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৪ টাকা। মোট খরচ হবে তিন হাজার ৪৬৬ কোটি ৯৯ লাখ চার হাজার টাকা। কাজটি পেয়েছে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ।

জানা গেছে, ই-পাসপোর্ট ইস্যু ও অপারেশন সাপোর্ট-সংক্রান্ত জার্মানি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ বাড়ছে। দ্বিতীয় দফায় এ মেয়াদ আরও ১৬ মাস বাড়ানো হচ্ছে। এ সময়ের জন্য সংস্থাটিকে প্রয়োজনীয় সেবা দেয়ার জন্য পরিশোধ করতে হবে ৮৮ কোটি ১১ লাখ ৯৯ হাজার ৭৭৪ টাকা।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশ ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর।

গত ২০১৮ সালের ২১ জুন একনেক সভায় ১০ বছর মেয়াদে (২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২৮ সালের জুন) প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়া হয়। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় চার হাজার ৬৩৫ কোটি ৯১ লাখ টাকা। এর মধ্যে তিন হাজার ৪০৪ কোটি ৯১ লাখ টাকার সমমূল্যের বৈদেশিক মুদ্রা রয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে জি-টু-জি

পদ্ধতিতে জার্মানির ভেরিডস জিএমবিএইচ সঙ্গে ২০১৮ সালে মূল চুক্তি এবং পরবর্তীকালে ২০২২ সালে প্রথম সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। মূল চুক্তি অনুযায়ী, সংস্থাটি প্রকল্পে দুই বছর মেয়াদি অপারেশন সাপোর্ট দেয়ার জন্য চুক্তিবদ্ধ রয়েছে।

সুরক্ষা সেবা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী কভিড-১৯ মহামারির কারণে ফোর্স ম্যাজিওর ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে উভয়পক্ষের সম্মতিতে অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদকাল ২০২০ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। কিন্তু বর্তমানে প্রকল্পে নিয়োজিত জনবল দিয়ে উচ্চ কারিগরি ও অপারেশন সাপোর্ট কার্যক্রম সফলভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। এজন্য প্রকল্পে উচ্চ কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন জনবল এবং বর্তমানে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কর্তৃক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার, ই-পাসপোর্ট বুকলেট, অ্যাসেম্বলি লাইন (ইপিবিএএল), ডেটা সেন্টার (ডিসি), ডিজাস্টার রিকভারি সাইটে (ডিআরএস) অপারেশন সাপোর্ট দেয়ার কাজে নিয়োজিত জনবলের প্রতিস্থাপক সংস্থানের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় অনুমোদন সাপেক্ষে চাহিদাকৃত জনবলের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে হাতে-কলমে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা অর্জনের জন্য আরও সময় প্রয়োজন বলে সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বিষয়টি প্রকল্পের ১০ প্রজেক্ট স্টিয়ারিং কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হলে প্রকল্পের চলমান অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদকাল ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সুরক্ষা সেবা বিভাগ কর্তৃক গত ২০২২ সালের ২৩ জুনে অপারেশন সাপোর্টের মেয়াদ ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রশাসনিক অনুমোদন দিয়েছে।