প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী ইরান

শেয়ার বিজ ডেস্ক: পারমাণবিক সমঝোতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় আগ্রহী ইরান। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান তেহরানের এমন অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। খবর: আল জাজিরা।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবিত করতে এবং এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত তেহরান। তবে এজন্য পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবিত করার আলোচনা অগ্রসর পর্যায়ে পৌঁছানো উচিত বলে মনে করেন তিনি। এমন সময়ে তার এই বক্তব্য এলো যখন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালের ওই চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করতে সরাসরি আলোচনার আহ্বান করছে।

আনুষ্ঠানিকভাবে চুক্তিটি জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত। জেসিপিওএ অনুযায়ী, পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে লাগাম টানার শর্তে তেহরানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চুক্তিটি থেকে ওয়াশিংটনকে বের করে আনেন এবং ইরানের ওপর আগের সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন। পরে তেহরানও চুক্তিতে তার জন্য রাখা শর্তের লঙ্ঘন শুরু করে।

এরপর জো বাইডেনের প্রশাসন এই পরমাণু চুক্তিতে ফেরার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়। তারা জেসিপিওএ’তে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইরান, তা কঠোরভাবে মেনে চললে যুক্তরাষ্ট্রও তার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখবে এবং তারা এ বিষয়ে ইরানের সঙ্গে কথা বলতেও প্রস্তুত বলে জানায়। এর প্রতিক্রিয়ায় ইরান বলেছে, পরমাণু চুক্তি বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্রের দিক থেকেই প্রথম পদক্ষেপ নিতে হবে।

তেহরানে এক সংবাদ সম্মেলনে হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান বলেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে বলে যে খবর বেরিয়েছে, সেটি সত্য নয়। যাই হোক, যদি আমরা এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছাই যেখানে গ্যারান্টিসহ একটি ভালো চুক্তিতে পৌঁছানো যাবে এবং এজন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যদি সরাসরি আলোচনার প্রয়োজন হয়, আমরা সেটি বিবেচনা করব।

১৯৭৯ সালের ১ এপ্রিল ইসলামি প্রজাতন্ত্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে ইরান। ১৯৮০ সাল থেকে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক সম্পর্ক নেই। সে বছর যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে ইরানের সব সম্পদ জব্দ করা হয়, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাও দেয়া হয়। এরপর আর কখনোই দুই দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়নি। উত্তেজনার পারদ চড়েছে দুই দেশের মধ্যে। তবে কমবেশি বাণিজ্য চলেছে। ইরানকে চাপে রাখতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান অস্ত্র হয়ে দাঁড়ায় দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি। যদিও এ কর্মসূচি শুরু হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের মদতপুষ্ট পাহলভি সরকারের আমলে। অবশ্য ইরানও পারমাণবিক ইস্যুটিকে বিভিন্ন সময় পশ্চিমে দর কষাকষির অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে।