[গতকালের পর]
ফাইবার-সমৃদ্ধ খাবার, যেমন পপকর্ন, কাঠবাদাম, ওটস, মসুরডাল, ছোলা, মটরশুঁটি, অ্যাভোক্যাডো, লাল আটা প্রভৃতি খাবারে ক্যালরি খুব কম থাকে এবং হজম হয় ধীরে ধীরে। তাই অনেক সময় পর ক্ষুধা লাগে। রক্তে চিনির পরিমাণও তাড়াতাড়ি বাড়ে না। সাহরিতে অনেকেই সারাদিন খাওয়া হবে না ভেবে অনেক বেশি খেয়ে ফেলেন। সেক্ষেত্রে বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা অতিক্রম করে ফেলেন। এতে রোজা শেষে দেখা যায়, পবিত্র মাহে রমজানের সময়টায় ওজন বাড়িয়ে ফেলছেন অনেকেই। সারাদিন খেতে পারবেন না বলে ইচ্ছামতো উদরপূর্তি করে খাবেন না। পেটের এক-চতুর্থাংশ খালি রাখবেন।
কাঁচা ছোলা: ইফতারে ভাজা-পোড়া না রেখে রাখতে পারেন কাঁচা ছোলা। কারণ ২৫-৩০ গ্রাম ছোলায় প্রায় ১০০ ক্যালরি থাকে, কিন্তু ফ্যাট থাকে মাত্র পাঁচ গ্রাম, যা কি না রক্তের চর্বি কমায়। তাই সামান্য পরিমাণ খেয়ে নিলেই অনেক শক্তি পাওয়া যায়। আবার কাঁচা ছোলা পেঁয়াজ, কাচামরিচ, শসা, টমেটো আর অল্প সরষের তেল দিয়েও মাখিয়ে নিতে পারেন। দারুণ সুস্বাদু এই খাবারটি আপনাকে মুহূর্তেই সতেজ করে তুলবে।
ফল: ইফতারে সহজলভ্যতা অনুযায়ী তিন থেকে চার রকমের ফল, যেমন পেয়ারা, আপেল, তরমুজ থাকা উচিত। প্রতি ১০০ গ্রাম হিসেবে এদের রয়েছে যথাক্রমে ৬৮, ৪৫ ও ৩০ ক্যালরি। শাকসবজির ক্ষেত্রেও রান্না ও সেদ্ধ মিলিয়ে খাওয়া উচিত।
এ ছাড়া শাকসবজি আর ফল মিলিয়ে পছন্দের কোনো সালাদ তৈরি করে নিতে পারেন স্বাদ অনুযায়ী। রঙিন ফলগুলো ইফতার আয়োজনে ফলের প্রয়োজন মেটানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রং মানুষের ক্ষুধা, আকষর্ণ ও মনকেও ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। তবে ফল এভাবে খাওয়ার সুযোগ না থাকলে জুস করেও খেতে পারেন। বিশেষ করে, কলা, বাঙ্গি, পেঁপে, কিংবা আনারস।
আমিষ: খাবারে যাতে প্রোটিনের ঘাটতি না হয়, সেজন্য ইফতার বা সাহরিতে চর্বিযুক্ত মাছ, চামড়াসহ মুরগির তরকারিও খেতে পারেন। যাদের গরুর মাংসে বিধিনিষেধ নেই তারা চর্বিযুক্ত গরুর মাংস খেতে পারেন। তবে প্রতিবেলা মাংস না খেয়ে এক বেলা মাছ খেতে চেষ্টা করুন।
রমজানের পরিশুদ্ধি কেবল ধর্মপালনেই নয়, বরং জীবনাচরণেও। আর রমজানে প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির মেলবন্ধনে প্রয়োজন পূর্বপ্রস্তুতি। তাই আগে থেকেই এসব ভেবে মনকেও প্রস্তুত রাখলে মাহে রমজানের পুরো মাসটাই সহজ ও সুন্দর হবে বলে আশা করা যায়। (শেষ)
Ñতানজিনা আলম