প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

যৌথ মহড়ায় রাশিয়া, চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নৌবাহিনী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাশিয়ার নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত একটি যুদ্ধজাহাজ চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেবে। আগামী ১৭ থেকে ২৭ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান ও রিচার্ডস বে বন্দর শহরের কাছে ভারত মহাসাগরে মহড়াটি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। খবর: তাস।

গতকাল সোমবার রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা তাস জানিয়েছে, অ্যাডমিরাল অব দ্য ফ্লিট অব দ্য সোভিয়েত ইউনিয়ন গোর্শকোভ জিরকন ক্ষেপণাস্ত্রে সজ্জিত। ফ্রিগেটটি যে ওই যৌথ নৌমহড়ায় অংশ নিচ্ছে এই প্রথম তা আনুষ্ঠানিকভাবে উল্লেখ করা হলো।

রাশিয়া জানিয়েছে, ১০০০ কিলোমিটারের বেশি পাল্লার জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের ৯ গুণ গতিতে উড়ে এ দূরত্ব অতিক্রম করবে। রাশিয়ার হাইপারসনিক অস্ত্রের ভাণ্ডার জিরকন ক্ষেপণাস্ত্র ও অ্যাভানগার্ড গ্লাইড ভিয়াকল ক্ষেপণাস্ত্রের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে। প্রতিরক্ষা সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে তাস বলেছে, অ্যাডমিরাল গোর্শকোভ সিরিয়ার তারতুসে লজিস্টিক সাপোর্ট পয়েন্টে যাবে, তারপর চীন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নৌবাহিনীর সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশ নেবে।

গত বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার জাতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এ নৌমহড়া দক্ষিণ আফ্রিকা, রাশিয়া ও চীনের মধ্যকার উদীয়মান সম্পর্ক শক্তিশালী করবে। ২০১৯ সালের প্রথম মহড়ার পর দক্ষিণ আফ্রিকায় এ তিন দেশের এটি দ্বিতীয় মহড়া বলে জানিয়েছে তারা।

চলতি মাসে গোর্শকোভ নরওয়েজিয়ান সাগরে একটি মহড়ায় অংশ নিয়েছিল। গত ৪ জানুয়ারি এ ফ্রিগেট মোতায়েন করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। এ রুশ যুদ্ধজাহাজটি আটলান্টিক ও ভারত মহাসাগরে সামরিক শক্তি প্রদর্শন করবে বলে এক অনুষ্ঠানে জানান তিনি। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু ও ফ্রিগেটের কমান্ডার ইগর ক্রোখমালও এ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন।

এ সময় পুতিন বলেন, মাতৃভূমির কল্যাণের জন্য আমি ক্রুদের সাফল্য কামনা করি। শোইগু বলেন, ফ্রিগেটটি আটলান্টিক, ভারত মহাসাগর ও ভূমধ্যসাগরে যাবে। তিনি যোগ করেন, এটি সমুদ্রে ও স্থলে শত্রুর বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট এবং শক্তিশালী হামলা করতে সক্ষম। বোর্ডে থাকা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রগুলো যেকোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অতিক্রম করতে পারে। এটি এক হাজার কিলোমিটার বেশি পাল্লা দিতে পারে।

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নয়ন নিয়ে চীন, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে। এ ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের ৫ গুণ গতিতে ছুটতে পারে এবং এগুলো শনাক্ত করা শক্ত।

গত বছর ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। যুদ্ধের মধ্যেই গত জুলাইয়ে নিজেদের নৌ-শক্তি দেখায় রাশিয়া। ৩১ জুলাই দেশটির নৌবাহিনী দিবসে সেন্ট পিটার্সবার্গের নেভা নদীতে আয়োজন করা হয় নৌ-মহড়ার। যেখানে প্রদর্শন করা হয় অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন।

নেভা নদীতে ভাসতে থাকে রুশ নৌবাহিনীর ৪৭টি অত্যাধুনিক যুদ্ধজাহাজ ও সাবমেরিন। এ সময় নৌ-প্যারেডের আয়োজন করা হয়।

নৌ-কুচকাওয়াজের মধ্যদিয়ে বিশ্বকে যেন নিজেদের নৌ-শক্তিই প্রদর্শন করে মস্কো। একদিকে ছিল যুদ্ধট্যাঙ্ক বহনে সক্ষম জাহাজ, অন্যদিকে অত্যাধুনিক সাবমেরিন, রণতরি ও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপকারী জাহাজ। মহড়ায় সাড়ে তিন হাজার নৌবাহিনীর সদস্য অংশ নেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রুশ নৌবাহিনীতে শক্তিশালী জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র যুক্ত করার ঘোষণা দেন পুতিন, যা চলতি মাসে বাস্তবে রূপ নিল। তখন তিনি জানান, জিরকন ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রটি শব্দের চেয়ে নয় গুণ দ্রুতগতিতে দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, যাকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী বলেও জানান পুতিন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিরাপত্তা সবার আগে নিশ্চিত করব। রাশিয়ার স্বার্থ অনুযায়ী নির্দিষ্ট জায়গায় জিরকন হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিস্থাপন করা হবে।