হুমায়ুন কবীর মানিক, রংপুর : বর্তমান আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদেও রংপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) স্থাপন হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন জেলার শিল্পোদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ী নেতারা। এ অঞ্চলে নির্মাণ না হওয়ায় শিল্পোদ্যোক্তারা বিক্ষিপ্তভাবে কৃষিজমিতে শিল্প-কারখানা নির্মাণ করছেন। ফলে প্রতি বছর কমে যাচ্ছে এখানকার কৃষিজমির পরিমাণ। অন্যদিকে এখানকার কৃষিবান্ধব পরিবেশ হুমকির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে বাইরের জেলার বিনিয়োগকারীরা খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছেন না এসব এলাকায় শিল্প-কারখানা নির্মাণে। ফলে বেকারের সংখ্যা বেশি থাকায় এসব এলাকার শ্রমিক কাজের সন্ধানে যাচ্ছেন ঢাকায়।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোস্তফা সোহরাব টিটু জানান, এখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হওয়াটা খুবই জরুরি। কারণ বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের রংপুর শিল্পনগরীতে খালি প্লট না থাকায় উদ্যোক্তারা রংপুরের বিভিন্ন জায়গায় অপরিকল্পিতভাবে কলকারখানা গড়ে তুলছেন। দেশের প্রত্যেক জেলায় একটি করে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে সরকারের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণের দাবি জানিয়ে চেম্বার থেকে পৃথকভাবে শিল্প মন্ত্রণালয়ে তাগিদও দেওয়া হয়েছিল।
রংপুর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট রেজাউল ইসলাম মিলন জানান, রংপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণে খাসজমিকে প্রাধান্য দিয়ে ২০০ থেকে ৩০০ একর জমি নির্বাচন করতে জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক জমি নির্বাচন করতে উদ্যোগও নিয়েছে জেলা প্রশাসন।
সনিক প্রাইম গ্রুপের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আক্কাছ আলী সরকার বলেন, আমরা আশা করছি দ্রুত রংপুরে বিশেষ শিল্পাঞ্চল নির্মিত হবে। এটা হলে আরও বেশি শিল্পোদ্যোক্তা শিল্প নির্মাণে এগিয়ে আসবেন।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান জানান, শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে জরুরি ভিত্তিতে জায়গা নির্বাচনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলায় খাসজমি খোঁজ করতে ইতোমধ্যে সব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন রংপুরের তিন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নেতারা।
রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবুল কাশেম বলেন, রংপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হলে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে পড়া এ অঞ্চলের বেকার সমস্যা দূর হবে। পাশাপাশি অর্থনীতিতে গতির সঞ্চার হবে। রংপুরের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তা বাস্তবায়ন করেছেন। রংপুরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের উদ্যোগ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
তবে রংপুরের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় এই উদ্যোগ যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়।