হুমায়ুন কবীর মানিক, রংপুর: রংপুরে ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) অধীন দ্বিতীয় শিল্পনগরী স্থাপনের আবেদন প্রায় ১২ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। দ্বিতীয় প্লট বরাদ্দের আবেদন শিল্প মন্ত্রণালয়ে পৌঁছলেও তা একনেকে ওঠেনি। যে কারণে জমির অভাবে বিভাগীয় নগরীতে পরিকল্পিতভাবে শিল্পের বিকাশ হচ্ছে না। প্লট বরাদ্দ কমিটি ও উদ্যোক্তাদের দাবি, বিসিকের অধীন ক্ষুদ্র শিল্প গড়ে ওঠার ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও শুধু জমির অভাবে অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে উঠায় প্রতিনিয়ত কৃষিজমির ওপর চাপ বাড়ছে।
রংপুর চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট আবুল কাশেম বলেন, ‘বিভাগে উন্নীত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে রংপুর জেলায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এদের অনেকে বিসিকের জমি না পেয়ে আবাসিক এবং কৃষি জমিতে অপরিকল্পিতভাবে শিল্প-কারখানা গড়ে তুলেছে। এতে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত কৃষি জমির ওপর চাপ বাড়ছে।’
জানা গেছে, নগরীর সিও বাজার কেল্লাবন্দ এলাকায় ১৯৬৭ সালে বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনের জন্য ২০ একর ৬৮ শতক জমি অধিগ্রহণ করা হয়। শিল্প-কারখানার জন্য ৮২টি প্লট নির্মাণ করা হয়। প্রতিটি প্লটের সাইজ হচ্ছে ৯ হাজার থেকে ১৮ হাজার বর্গফুট। বর্তমানে ২৭টি কারখানা এখানে চালু আছে। চালু কারখানার মধ্যে আছে আরএফএলের পাঁচটি ইউনিট। মোট জমির পরিমাণ ৫ একর ৪১ শতক। অন্য কারখানার মধ্যে বিএডিসি কোল্ড স্টোর, চৌধুরী কোল্ড স্টোর, রংপুর ফ্লাওয়ার মিলস, সাঈদ বেকারি এবং মিল্ক ভিটা অন্যতম।
স্বাধীনতার আগে প্রতিষ্ঠিত বিসিক শিল্পনগরী স্বভাবতই প্রায় ৫০ বছর পর এ অঞ্চলের বর্ধিত জনসংখ্যার চাহিদা পূরণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। বিষয়টি উপলব্ধি করে জেলা বিসিক কর্তৃপক্ষ ২০০৪-০৫ অর্থবছরে নগরীর অদূরে দমদমা এবং ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন তালুক ধর্মদাস এলাকায় দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী স্থাপনে ৫০ একর জমি অধিগ্রহণে শিল্প মন্ত্রণালয়ে অনুমতির জন্য আবেদন করে। কিন্তু আজও আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে।
রংপুর চেম্বারের পরিচালক জাভেদ হাসান বলেন, ‘বিসিকের ২য় শিল্পনগরী গড়ে না ওঠায় আবাসিক এলাকায় ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানা স্থাপন করবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু পরিবেশের ছাড়পত্র না পাওয়ায় তা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু কবে হবে দ্বিতীয় শিল্পনগরী সে আশায় অন্তহীন সময় ধরে অপেক্ষা করা কি আদৌ সম্ভব।’
প্রায় প্রতিদিনই নতুন উদ্যোক্তারা কারখানা স্থাপনে জমির জন্য যোগাযোগ করছেন। আলাপকালে জেলা বিসিকের ডিজিএম খায়রুল আলম আল মাজী বলেন, ‘রংপুরের দমদমা ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট সংলগ্ন তালুক ধর্মদাস এলাকায় ৫০ একর জমি নিয়ে দ্বিতীয় শিল্পনগরী স্থাপনের জন্য স্থানীয় বিসিকের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছে। আমরাও এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছি। গত বছরের ৬ ডিসেম্বর শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আজিজুল ইসলাম জায়গাটি সরেজমিন দেখে গেছেন।’