নিজস্ব প্রতিবেদক: আসন্ন রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের চাহিদা ও সরবরাহ স্থিতিশীল রাখতে এ ধরনের পণ্য আমদানিতে এলসি খোলার শর্তাবলি সহজ করার বিষয় বিবেচনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার মো. সামীর সাত্তার।
গতকাল শনিবার ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ২০২৩ সালে সংগঠনটির কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ডিসিসিআই সভাপতি সামীর সাত্তার সমসাময়িক অর্থনীতিবিষয়ক ১০টি বিষয়বস্তুর ওপর বিস্তারিত চিত্র তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনের প্রশ্নোত্তর পর্বে ঢাকা চেম্বার সভাপতি বলেন, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ও জ্বালানি সংকটে দেশে জ্বালানির দাম বাড়ছে। জ্বালানির দাম বাড়ার বিষয়টি কেবল একমুখী হওয়া উচিত হবে না। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমানো হলে দ্রুত সে অনুপাতে স্থানীয় বাজারেও যেন জ্বালানির দাম সমন্বয়ে উদ্যোগ নেয়া হয়।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, সরকার সম্প্রতি শুধু শিল্প খাতে গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, বাসা-বাড়ি এবং কৃষি খাতের জন্য তা প্রযোজ্য নয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, দেশের ব্যবসায়ী সমাজ শিল্প খাতে পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে বেশি দামে হলেও নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ পেতে চায়, যেন স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি আমাদের রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়। এটা সত্য যে, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়লে আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ওপর কিছুটা হলেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, কারণ এটি তাদের পণ্য উৎপাদন খরচ বাড়াবে।
রাতারাতি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো সম্ভব নয় বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এজন্য আমাদের রেমিট্যান্স বাড়াতে প্রণোদনা বৃদ্ধি ও রপ্তানি আয় বাড়ানোর ওপর আরও বেশি হারে জোর দিতে হবে।
বৈশ্বিক মন্দা অবস্থার কারণে স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা এ বৈশ্বিক পরিস্থিতির বাইরে নই, ২০২৩ সালে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় বিদ্যমান কর্মসংস্থানের সুযোগ ধরে রাখাটাও এক ধরনের সফলতা।
তিনি আরও বলেন, প্রতি বছর আমাদের দেশে প্রায় ২০ লাখ তরুণ শিক্ষাজীবন শেষ করে চাকরি বাজারে প্রবেশ করেন, তবে বিপুল এ জনগোষ্ঠীর জন্য উপযোগী কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করা বেশ চ্যালেঞ্জের বিষয়। তাদের অনেকেই হয়তো চাকরি পাবেন, তবে অবশিষ্টদের মধ্যে একটি বড় অংশ উদ্যোক্তা হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলবেন।
ডিসিসিআই সভাপতি বলেন, আমাদের তরুণ উদ্যোক্তারা তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ে বেশ উদ্ভাবনী দক্ষতার অধিকারী। বৈশ্বিক অস্থিতিশীল বাজারে সিএমএসএমই খাতের তরুণ উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ঋণের সহজলভ্যতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং বিদ্যমান জটিল পরিস্থিতিতে তাদের সহজ শর্তে অর্থায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
এ বছর ঢাকা চেম্বার সিএমএসএমই, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়ন, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বেসরকারি ও বৈদেশিক বিনিয়োগ, আর্থিক খাত, কর ব্যবস্থাপনা, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন, অর্থনৈতিক কূটনীতি, অবকাঠামো ও স্মার্ট বাংলাদেশ প্রভৃতি বিষয়ের ওপর অধিক হারে গুরুত্বারোপ করবে এবং বিষয়গুলোর ওপর ডিসিসিআই সভাপতি বিস্তারিত সুপারিশালা উপস্থাপন করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেনÑডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর (আরমান), সহ-সভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলী প্রমুখ।