প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাশিয়ার তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতায় পরিণত হয়েছে চীন। এর মধ্য দিয়ে চীনের কাছে তেল বিক্রিতে সৌদি আরবকে ছাড়িয়ে গেল রাশিয়া। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার মধ্যেও তেল বিক্রিতে নিজেদের অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেল দেশটি। খবর: আল জাজিরা।

বিশ্বে অন্যতম পরাশক্তি রাশিয়া। দেশটি চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে চীনে ১৫ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন টন তেল রপ্তানি করেছে। অর্থাৎ দিনে রাশিয়া ১৯ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল তেল চীনে বিক্রি করছে।

চীন সরকারের তথ্য বলছে, গত বছরের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির তুলনায় এ বছরের প্রথম দুই মাসে চীনে রাশিয়ার তেল রপ্তানির পরিমাণ বেড়েছে ২৩ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০২২ সালের একই সময় রাশিয়া থেকে চীনে প্রতিদিন তেল রপ্তানি করা হত ১৫ লাখ ৭০ হাজার ব্যারেল।

সৌদি আরব থেকে চীন আলোচ্য দুই মাসে আমদানি করেছে ১৭ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল তেল। গত বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরব থেকে চীন প্রতিদিন ১৮ লাখ ১০ হাজার ব্যারেল তেল আমদানি করেছিল। গত বছর চীনে তেল সরবরাহকারী দ্বিতীয় প্রধান দেশ ছিল রাশিয়া। গত বছর রাশিয়া থেকে চীনের তেল রপ্তানি করা হয়েছে ৮৬ দশমিক দুই মিলিয়ন টন।

অপরদিকে গত বছর সৌদি আরব ছিল চীনে শীর্ষ তেল সরবরাহকারী দেশ। এ সময় সৌদি আরব ৮৭ দশমিক ৪৯ মিলিয়ন টন তেল সরবরাহ করেছে চীনে।

গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর পর থেকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নানা নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। এর মধ্যে অন্যতম তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা। দেশগুলো রাশিয়ার তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৬০ ডলার ঠিক করে দেয়। এতে রাশিয়া বিশেষ করে ইউরোপের বাজারে তেল পাঠানো অনেকাংশে কমিয়ে দেয় এবং সেই তেল তুলনামূলক কম দামে চীনের কাছে বিক্রি করে। এ সময় চীনের পাশাপাশি ভারতও সবচেয়ে কম দামে তেল কেনে।

চীনের তেল পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কম দামে তেল কেনায় উপকৃত হয়। এসব প্রতিষ্ঠানের বেশিরভাগের অবস্থান চীনের শ্যানডং প্রদেশে। অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় গত মাসে ইস্টার্ন সাইবেরিয়া-প্যাসিফিক ওশান (ইএসপিও) পাইপলাইন দিয়ে এ প্রদেশে রাশিয়ার অপরিশোধিত তেল সবচেয়ে বেশি সরবরাহ করা হয়। এর আগের মাস জানুয়ারির তুলনায় আট শতাংশ কম দামে গত মাসে ইএসপিও দিয়ে তেল সরবরাহ করা হয়। এমনকি আইসিই ব্রেন্ট বেঞ্চমার্কের তুলনায় কম দামে ইএসপিও দিয়ে চীনে তেল সরবরাহ করে রাশিয়া।

গত বছর চীনে কভিড-১৯-এর প্রকোপ বাড়ে। এজন্য দেশটিতে করোনা-সম্পর্কিত লকডাউন বাড়ানো হয়। ফলে দেশটির অর্থনৈতিক কার্যক্রম কমে যায়। এতে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কিছুটা নি¤œমুখী হয়। কারণ চীন সবচেয়ে বেশি ক্রুড তেল আমদানি করে। এ সময় দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সিনোপেক ও পেট্রোচায়না তাদের আমদানি কমিয়ে দেয়। গত মাসে ফের রাশিয়ার উরাল গ্রেড কার্গো থেকে তেল কেনা শুরু করে। এর কয়েক দিন আগে রাশিয়ার তেলের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের তেলের ওপর নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি এড়াতে চীনের পরিশোধনকারীরা মধ্যবর্তী ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে তেল কিনছে। এ মধ্যস্থতাকারীরা জাহাজ ও বিমা-সংক্রান্ত বিষয়গুলোর দেখভাল করে।