নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ নির্বাচন কমিশন (ইসি) পুনর্গঠন নিয়ে নিবন্ধনকৃত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৮ ডিসেম্বর থেকে সংলাপ শুরু করবেন। গতকাল সোমবার রাষ্ট্রপতির প্রেসসচিব জয়নাল আবেদীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
প্রেসসচিব বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি আগামী ১৮ ডিসেম্বর থেকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ শুরু করবেন। ওই দিন বিকাল সাড়ে ৪টায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সঙ্গে প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রপতি ২০ ডিসেম্বর জাতীয় পার্টি, ২১ ডিসেম্বর লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও কৃষক-শ্রমিক জনতা লীগ এবং ২২ ডিসেম্বর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) সঙ্গে সংলাপ করবেন। বাকি নিবন্ধিতদলগুলোকে পর্যায়ক্রমে ডাকা হবে বলে তিনি জানান।
রাষ্ট্রপতির চিঠিপ্রাপ্তির বিষয়টি স্বীকার করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘চিঠি পেয়েছি। আমরা কতজন যাব, এসব বিষয়ে দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর বিকাল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবভবনে যাবে বিএনপির প্রতিনিধিদল।’
এলডিপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব শাহাদাৎ হোসেন সেলিম বলেন, ‘আমরা চিঠি পেয়েছি। দলীয় প্রধান কর্নেল অলি আহমদ এলেই চিঠি খুলব। আগামী ২১ ডিসেম্বর আমাদের ডাকা হয়েছে রাষ্ট্রপতির ভবনে।’
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের যুগ্ম সম্পাদক অধ্যক্ষ ইকবাল সিদ্দিকী বলেন, ‘এখনও চিঠি হাতে পাইনি। আমি দলের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর সঙ্গে ঢাকার বাইরে আছি।এখনও চিঠি হাতে পাইনি। আমি এখন নরসিংদী আছি। দলের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীও এখানে আসবেন। তিনি এলেই এ বিষয়ে জানতে পারব। এর আগে কিছু বলতে পারছি না।’
এ বিষয়ে জানতে চেয়ে জাপার একাধিক নেতাকে ফোন করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
১৮ নভেম্বর এক অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশন গঠন ও নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে ১৩ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। প্রস্তাবে তিনি সব দলের সঙ্গে আলোচনা ও ঐকমত্যের ভিত্তিতে সর্বজন শ্রদ্ধেয় বিতর্কমুক্ত ব্যক্তিদের নিয়ে একটি কমিশন গঠনের সুপারিশ করেন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ওই দিনই বিএনপির প্রস্তাবটি প্রত্যাখ্যান করে।
২১ নভেম্বর বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নির্বাচন কমিশন গঠনে খালেদা জিয়ার দেওয়া প্রস্তাব রাষ্ট্রপতিকে দেবে বলে জানান। এর জন্য তারা রাষ্ট্রপতির কাছে সময়ও চায়।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন গঠন করার এখতিয়ার রাষ্ট্রপতির। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শক্রমে তিনি নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দিতে পারেন। তবে বর্তমান কমিশন গঠনের আগে সে সময়ের রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান সার্চ কমিটির মাধ্যমে কমিশন গঠন করেছিলেন। আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। বিএনপি এবারও সব দলের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে।
২০১২ সালে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের পর সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেন।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ আগামী ফেব্রুয়ারিতে শেষ হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিতব্য পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন পরিচালনা করবেন।