প্রতিনিধি, নীলফামারী: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি রাষ্ট্রপতি হব না, আমি ছোটাছুটি করা মানুষ। আমি রাস্তা দেখি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পদ্মা সেতু ৭০ বার পরিদর্শন করেছি। সকালের খাবার দুপুরে খাই, দুপুরের খাবার রাতে খাই।’ গতকাল রোববার দুপুরে নীলফামারীর সৈয়দপুরের ফাইভ স্টার মাঠে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণভাণ্ডার থেকে রংপুর বিভাগের মানুষের জন্য কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সৈয়দপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানটি জনসভায় রূপ নেয়। ওবায়দুল কাদের সেখানে উপজেলার তিন হাজার মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেন। এ ছাড়া অনুষ্ঠানে উপস্থিত রংপুর বিভাগের ৯টি জেলা থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতাদের হাতে বিতরণের জন্য ২৭ হাজার কম্বল তুলে দেন তিনি।
কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী। বিশেষ অতিথি ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ-বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় নেত্রী হোসনে আরা লুৎফা প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দলের কেন্দ্রীয় ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ-বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ অঞ্চলে ৩০ লাখ কম্বল বিতরণ করেছি। আজ এসেছি ২৭ হাজার কম্বল নিয়ে। রংপুর বিভাগের ৯ জেলার শীতার্ত মানুষের মধ্যে এসব কম্বল বিতরণ করা হবে; অথচ মির্জা ফখরুল নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে একটি কম্বলও দেননি। দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ান না।’ বিএনপির নেতারা ‘শীতের অতিথি পাখি’ বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘তাদের
ভোটের সময় দেখা যায়। নির্বাচন এলে তারা কালেকশন করে। কিছু নিজেরা খায়, কিছু ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ডের কাছে পাঠিয়ে দেয়। তিনি টেমস নদীর পাড়ে বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। তারেক রহমানের সাহস নেই তিনি দেশে এসে রাজনীতি করবেন।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উত্তরাঞ্চল ছিল মঙ্গাপীড়িত। নেত্রীর সঙ্গে এ অঞ্চল সফর করেছি। এ অঞ্চলের মানুষ অনেক কষ্ট করেছে। এখন সেই মঙ্গা জাদুঘরে চলে গেছে। এলেঙ্গা থেকে রংপুর পর্যন্ত ছয় লেন রাস্তা হচ্ছে। ওই রাস্তায় থাকবে ফুলের সুবাস।’
উত্তরাঞ্চলে কম্বল বিতরণের এই অনুষ্ঠানে গিয়েও বরাবরের মতো ‘খেলা হবে’ বলে হুংকার দেন কাদের। তিনি বলেন, ‘খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, ভোটচুরির বিরুদ্ধে, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ও ভুয়া ভোটের বিরুদ্ধে। যারা দেশের সহস্র জননীর বুক খালি করেছে, যারা জাতির পিতা হত্যাকারীদের পুরস্কৃত করেছে, আইন করে তাদের রক্ষা করেছেÑতাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।’
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ কচুপাতার পানি, কিংবা শিশির বিন্দু নয় যে টোকা দিলেই পড়ে যাবে। আওয়ামী লীগের ভীত এতটা দুর্বল নয়। আওয়ামী লীগের সম্পর্ক এদেশের মাটি ও মানুষের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন। শেখ হাসিনাই বাবার পাশে মায়ের নামের ব্যবহার শুরু করেছেন। তিনি মায়েদের সম্মান দিয়েছেন। তিনি সব সময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। এ অঞ্চলের জন্য ৯ লাখ শীতবস্ত্র দিয়েছেন তিনি। আজ রংপুর বিভাগের ৯ জেলায় ২৭ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। মন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি) ১০ ডিসেম্বর সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়েছিল, কিন্তু পারেনি, কেননা তাদের আন্দোলনের কোনো ইস্যু নেই। বিএনপির সঙ্গে সময়মতো খেলা হবে।