এবারও চৈত্র-বৈশাখের দাবদাহের মধ্যে পড়ছে রমজান। এই আবহাওয়ায় লম্বা একটা সময় পানি না খেয়ে থাকতে হবে। সন্ধ্যা থেকে সাহরির মধ্যেই তাই সারা দিনের পানির চাহিদা পূরণ করে নিতে হবে। খাবারের বেলায়ও তাই। কর্মস্থলের সময়সূচিও বদলাচ্ছে। পরিবর্তিত জীবনধারায় মানিয়ে নিতে একটু সময় লাগতে পারে কারও কারও। সময়ের সঙ্গে জীবনধারায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে চাই সু-অভ্যাসের চর্চা।
খাওয়া-দাওয়া ঠিকঠাক: সারা দিন না খেয়ে থাকা হচ্ছে বলে সন্ধ্যা, রাত বা শেষ রাতে একেবারে ভরপেট খেয়ে ফেলা যাবে না। সংযমের মাসে সংযম ধরে রাখতে হবে। যে সময়ে খাবার খেতে পারছেন, সে সময়ের মধ্যে ভাগে ভাগে অল্প করে খান। ইফতারি, রাতের খাবার ও শেষরাতের খাবারÑমূলত এই তিনটি সময়ে খাওয়ার চল থাকলেও ভাগে ভাগে খাওয়া ভালো। ইফতারি মানেই ভাজাপোড়া, প্রচলিত এ ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতে চেষ্টা করুন। আর শুধু ইফতারে কেন, সব বেলায়ই অতিরিক্ত তেল বা মসলা দেয়া খাবার এড়িয়ে চলুন। সুস্থ থাকতে চাইলে ফাস্ট ফুড অবশ্যই বর্জনীয়। হালকা খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুন। এতে সুস্থ থাকবেন। তাজা ফল কিংবা সবজি দিয়ে তৈরি বিভিন্ন পদ খেতে পারেন। পরিশোধিত বা রিফাইনড খাবার না খাওয়াই ভালো। বুফে পদ্ধতিতে পরিবেশিত বা ইফতারের অফুরান আয়োজনে যোগ না দেয়াই ভালো। সারা দিনে আপনার যতটা ক্যালরি প্রয়োজন, ইফতারের সময় থেকে শেষ রাতের মধ্যে ঠিক ততটাই গ্রহণ করুন। এর বেশি নয়। পাতে বাড়তি লবণ নেবেন না। খাবার প্রস্তুতকরণ ও পরিবেশনে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন। অস্বাস্থ্যকর, খোলা খাবার খাবেন না। খাবার বা পানি খাওয়ার পরপরই শুয়ে পড়বেন না।
তৃষ্ণায় চাই তৃপ্তি: ইফতারের কাছাকাছি সময়ে হয়তো তৃষ্ণা পাবে খুব। যারা বাইরে যান এবং ঘরের কাজ করেন, প্রত্যেকেরই এ রকম হতে পারে। তাই ইফতার থেকে শুরু করে শেষরাতের মধ্য পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে। কেবল পানিই নয়, তাজা ফলের রস বা শরবত, লাচ্ছি, স্মুদির মতো তরলও গ্রহণ করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত চিনি খাবেন না। মিষ্টি পানীয়ের বদলে একটু পানসে স্বাদের পানীয়ই স্বাস্থ্যকর। এ আবহাওয়ায় ২৪ ঘণ্টায় আপনার যতটা পানির প্রয়োজন, অন্তত সেই পরিমাণটা অবশ্যই পূরণ করে নিতে হবে। তবে সেটাও ভাগে ভাগে। একবারে ভরপেট পানি খেলে হাঁসফাঁস লাগবে। ইফতারের শুরুতে খানিকটা পানি খেলেও কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী খাবারের আধঘণ্টা পর পানি বা তরল খাবার খাওয়া উচিত। [আগামীকাল সমাপ্য]
ডা. রাফিয়া আলম
ক্লিনিক্যাল স্টাফ, নিউরোমেডিসিন বিভাগ
স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড, ঢাকা