নিজস্ব প্রতিবেদক: শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ভারী স্কুলব্যাগ বহন আর নয়। তা নিষিদ্ধে আগামী ছয় মাসের মধ্যে আইন প্রণয়ন করতে সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আইন প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত ‘শিশুদের ভারী স্কুলব্যাগ বহন করা যাবে না’ এই মর্মে এক মাসের মধ্যে সার্কুলার জারি করতে বলা হয়েছে। আইন প্রণয়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব এবং প্রাথমিক গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশীষ রঞ্জন দাসের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাসুদ হাসান দোলন।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বছরের ১১ আগস্ট ‘প্রাথমিক বিদ্যালয়গামী শিশুদের শরীরের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ভারী স্কুলব্যাগ বহন নিষিদ্ধ ও প্রি-প্রাইমারি শিশুদের স্কুলব্যাগ বহন না করতে আইন প্রণয়নের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না’, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আইন সচিব, শিক্ষা সচিব, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে দুই সপ্তাহের মধ্যে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
পরে রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি হয়। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে শিশুদের ভারী স্কুলব্যাগ বহন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৯ আগস্ট সুপ্রিমকোর্টের তিন আইনজীবী একটি রিট আবেদন করেন। আইনজীবীরা হলেন এসএম মাসুদ হোসেন দোলন, মো. জিয়াউল হক ও ?আনোয়ারুল করিম।
হাইকোর্ট বলেছেন, এই নির্দেশনা না মানলে কী শাস্তি বা ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা সার্কুলারে উল্লেখ করতে হবে। পাশাপাশি নির্দেশনা পালনের বিষয়টি পর্যবেক্ষণের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের কথাও সার্কুলারে থাকতে হবে।
রায়ের পরে মাসুদ হোসেন দোলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহন করলে শিশুদের শরীরে স্থায়ী ইনজুরি হয়, যা আদালত ‘পাবলিক ইনজুরি’ বলছেন। এ ধরনের ব্যাঘাত সারা জীবনের জন্য বহন করতে হয়। তাই এমন ভারী ওজনের ব্যাগ বহন নিষিদ্ধ করতে আইন প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।’
দোলন আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী ভারতসহ অনেক দেশেই এমন আইন রয়েছে। সেসব আইনে প্রাক-প্রাথমিকে শিশুরা ব্যাগ ব? ব্যবহার করবে না এবং প্রাথমিকের শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের ওজনের ১০ শতাংশের বেশি ওজনের ব্যাগ বহন নিষিদ্ধ।’