প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

শেয়ারপ্রতি চার টাকা ২৭ পয়সা লোকসানে হাইডেলবার্গ সিমেন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি হিসাববছরের প্রথম ৯ মাস বা তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে, ২০২২) শেয়ারপ্রতি চার টাকা ২৭ পয়সা লোকসান গুনছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত সিমেন্ট খাতের প্রতিষ্ঠান হাইডেলবার্গ সিমেন্ট বাংলাদেশ লিমিটেড। আর প্রথম তিন প্রান্তিকে লোকসানের কারণে গত ৩০ সেপ্টেম্বরে তাদের শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদও কমেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা গেছে, চলতি হিসাববছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি-সেপ্টেম্বরে, ২০২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি চার টাকা ২৭ পয়সা লোকসান হলেও আগের বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৯ টাকা ৮৮ পয়সা। অর্থাৎ আগের হিসাববছরের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে ১৪ টাকা ১৫ পয়সা। মূলত সিমেন্ট তৈরির কাঁচামালের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবহন খরচ আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। একইসঙ্গে সম্প্রতি মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমে যাওয়া এবং কোম্পানিটির প্ল্যান্ট মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণের ব্যয় মেটাতে গিয়ে এমন লোকসানের সম্মুখীন হয়েছে কোম্পানিটি। তবে শুধু চলতি হিসাববছরের তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২২) হিসাবে দেখা গেছে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান কমেছে। কোম্পানিটির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে তৃতীয় প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৬৪ পয়সা, আগের হিসাববছরের একই সময়ে যা ছিল ১ টাকা ৯১ পয়সা। সে হিসেবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান কমেছে ১ টাকা ২৭ পয়সা। এদিকে ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২২ কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৫৯ টাকা ৭৩ পয়সা, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরে যা ছিল ৬৬ টাকা ৬০ পয়সা। আর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ২ টাকা ৮৩ পয়সা, আগের বছরের একই সময়ে ছিল ২২ টাকা ৫৭ পয়সা।

২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে ২৬ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৮ টাকা ৪১ পয়সা, আর ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৬৬ টাকা ৬০ পয়সা। এর আগে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত হিসাববছরে ২০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল। সে সময়ে ইপিএস হয়েছিল ১ টাকা ৪৩ পয়সা (লোকসান), আর ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য ছিল ৬৮ টাকা ১০ পয়সা।

সিমেন্ট খাতের এই কোম্পানিটি ১৯৮৯ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ১০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৫৬ কোটি ৫০ লাখ ৪০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৩১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ৫ কোটি ৬৫ লাখ ৩ হাজার ৫৯০ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের ৬০ দশমিক ৬৭ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ২৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ ও বাকি ১২ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।

গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর অপরিবর্তিত থেকে প্রতিটি সর্বশেষ ১৭৯ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ১৪৯টি শেয়ার মোট সাত বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৩০ হাজার টাকা। আর দিনভর শেয়ারদর ১৭৯ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন করে। এক বছরের মধ্যে শেয়ারদর ১৭৩ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ৩৫২ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য-আয় অনুপাত ২১ দশমিক ৩০।