প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

সচেতনতায় স্ট্রোক প্রতিরোধ

স্ট্রোক বা পক্ষাঘাত বাংলাদেশে বয়স্ক মানুষের মৃত্যুর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ কারণ। মূলত চল্লিশোর্ধ্ব ব্যক্তিরা বেশি আক্রান্ত হলেও অল্প বয়সের মানুষও আক্রান্ত হতে পারে। অনেকের ধারণা, স্ট্রোক হার্ট বা হƒৎপিণ্ডের অসুখ। কিন্তু স্ট্রোক আসলে মস্তিষ্কের একটি রোগ। মস্তিষ্কের কোনো অংশে রক্তক্ষরণ বা রক্ত চলাচল ব্যাহত হওয়ার কারণে যে ক্ষতি হয়, সেটাই স্ট্রোক। স্ট্রোক থেকে প্যারালাইসিস বা পক্ষাঘাতগ্রস্ত, বিকলাঙ্গ এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

যে পরিবারে একজন স্ট্রোকের কারণে পক্ষাঘাতগ্রস্ত রোগী আছেন, তারা প্রতিনিয়ত এর কারণে সীমাহীন বিপর্যস্ততায় ভুগছেন। শুধু সচেতনতার অভাবে বিপুলসংখ্যক মানুষকে এমন মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়।

প্রথমত, জানতে হবে যে স্ট্রোক একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। সঠিক জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মাধ্যমে স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব। সঠিক ওজন, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের নিয়ন্ত্রণ, চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার, ধূমপান পরিহার করা এবং নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব। এসবের পাশাপাশি প্রয়োজন স্ট্রোকের চিকিৎসা নিয়ে সচেতন হওয়া। স্ট্রোকের রোগীরা প্রায়ই অনেক দেরি করে হাসপাতালে পৌঁছান। ততক্ষণে রোগীকে সঠিক চিকিৎসা দেয়ার আর সময় থাকে না। অথচ সময়মতো চিকিৎসা নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনা যায়।

তাই স্ট্রোকের লক্ষণ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা ও সচেতনতা প্রয়োজন। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে আনা সম্ভব হলে স্ট্রোকের ধরন অনুযায়ী রোগীর ত্বরিত চিকিৎসা করে তাকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। স্ট্রোকের লক্ষণ সহজে চেনার জন্য বিশ্বব্যাপী ‘বি ফাস্ট বা দ্রুত করুন’ বাক্যবন্ধ ব্যবহার করা হয়। এ কারণে এবারের বিশ্ব স্ট্রোক দিবসের সেøাগান হলোÑপ্রিসিয়াস টাইম বা প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। ইংরেজি বি ফাস্ট শব্দবন্ধ দিয়েই স্ট্রোকের লক্ষণ বা উপসর্গ মনে রাখা সম্ভব। ‘বি’ অর্থ ব্যালান্স বা ভারসাম্য। হঠাৎ করে ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাওয়া। ‘ই’ অর্থ আই বা দৃষ্টি। হঠাৎ চোখে দেখতে সমস্যা। ‘এফ’ অর্থ ফেস বা মুখমণ্ডল। হঠাৎ মুখের একদিক বাঁকা হয়ে যাওয়া। ‘এ’ অর্থ আর্ম বা বাহু। হঠাৎ করে এক হাত দুর্বল হয়ে যাওয়া। ‘এস’ অর্থ স্পিচ বা হঠাৎ কথা জড়িয়ে আসা। ‘টি’ অর্থ টাইম বা সময়। বাড়িতে স্ট্রোকের রোগীর পরিচর্যা নিয়ে সচেতনতার প্রয়োজন আছে। একজন স্ট্রোক রোগী কিছুদিনের মধ্যেই আবার স্ট্রোকের শিকার হতে পারেন, যা আগের চেয়ে ভয়াবহ হয়ে থাকে। বাকি অংশ আগামীকাল

ডা. এম এস জহিরুল হক চৌধুরী

ক্লিনিক্যাল নিউরোলজি বিভাগ, ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্সেস ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা