সময় খুব দ্রুত চলে যায়। কথায় আছে সময় ও স্রোত কারও জন্য অপেক্ষা করে না। আজকের দিন, আগামীকাল অতীত। কিন্তু এই সময় কি আমরা যথাযথভাবে ব্যবহার করছি? সময়ের মূল্যায়ন কী হচ্ছে?
আমাদের জীবনের যে কটা পর্যায় আছে, তাও সময়ের কাঠিতে মাপা হয়। জীবনের সবচেয়ে কার্যকর সময় হচ্ছে যৌবনকাল। এ বসেই মানুষ চাইলে তার ভবিষ্যৎ নিজেই তৈরি করতে পারে। এই বয়সে সময়ের কেমন ব্যবহার হয়, তার ওপর নির্ভর করে আগামীর ভবিষ্যৎ। এই বয়সের কার্যক্রমের ওপর নির্ভর করে একজন মানুষ দেখতে পারবে তার অনাগত দিনগুলো কেমন কাটবে।
আমরা আমাদের সময়গুলো দক্ষতা উন্ননের পেছনে ব্যয় করতে পারি। যে দক্ষতা আমাদের বর্তমান সময়ের কার্যকর ব্যবহার ঘটাবে, অন্যদিকে আমাদের অনাগত দিনগুলোকে আলোকিত করবে। আমাদের সক্ষম করে তুলবে প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিশ্বে টিকে থাকতে। সে দক্ষতাগুলো হতে পারে আইটি ক্ষেত্রে, হতে পারে কমিউনিকেশনের ক্ষেত্রে অথবা নিজের ভালো লাগার ক্ষেত্রগুলোতে। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি আমাদের দক্ষতা উন্নয়নে সব থেকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, আমাদের তরুণ প্রজšে§র অধিকাংশ একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়নের তেমন কিছুই করে না। সময় পেলেই বুঁদ হয়ে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নষ্ট করে নিজেদের মূল্যবান সময়।
এই ভুলটা বুঝতে বুঝতে অনেকের একাডেমিক পড়াশোনা শেষ হয়ে যায়। যখন চাকরি খোঁজার সময়, তখন অনেকেই চাকরির শর্ত (নির্দিষ্ট কিছু দক্ষতা)গুলো দেখে রীতিমতো ঘাবড়ে যায়। অনেকেই অনুশোচনা করে, কী করলাম পড়াশোনার পাশাপাশি? চাইলেই ছাত্র জীবনে এসব দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব ছিল। তখন চাকরি করার বয়সে ভর্তি হতে হয় দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে।
সময় একবার চলে গেলে আর ফিরে আসবে না। সময়ের মূল্যায়ন সময়েই করতে হবে। অন্যথা আফসোস করা ছাড়া উপায় থাকবে না। ইচ্ছা করলেই আমরা আমাদের প্রতিদিনের কিছু সময় দক্ষতা উন্ননের পেছনে ব্যয় করতে পারি।
সময় যেমন মূল্যবান, তরুণ প্রজš§ও দেশের জন্য মূল্যবান। সময়ের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমেই তরুণ সমাজ নিজের, দেশের ও দশের ভাগ্য উন্ননে অবদান রাখতে পারে। এক বছরের সময়গুলোকে পরিকল্পনামাফিক ভাগ করে নিয়ে দক্ষতা উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারি। আমরা ভেবে দেখতে পারি আমাদের কোন কোন ক্ষেত্রে দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতিগুলো মেটানোর জন্য সমকে নির্ধারিত মাপকাঠিতে ভাগ করে নিতে পারি এবং সময়ের কার্যকর ও যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা আমাদের কাক্সিক্ষত দক্ষতা উন্নয়ন ঘটাতে পারি।
মোহাম্মদ ইউছুপ হোসেন
শিক্ষার্থী, ইতিহাস বিভাগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়