শেখ আবু তালেব: নেতিবাচক প্রবণতার মধ্য দিয়ে লেনদেন শুরু হলেও ইতিবাচকে শেষ হয়েছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক। গত সপ্তাহ শেষে ডিএসইতে অধিকাংশ শেয়ারের দর পতন হয়েছে। ডিএসই সূচক আগের চেয়ে ৩৪ দশমিক ৪২ পয়েন্ট বা শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এই সময়ে আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানের শেয়ার লেনদেনে মিশ্র প্রবণতা দেখা গেছে। কিন্তু অন্যান্য খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ করেছে। দুই খাতের মধ্যেই গেইনারের শীর্ষে রয়েছে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের শেয়ারদর।
গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে তেলের দর বৃদ্ধির বিষয়টি আলোচিত হয়। তেলের দর বৃদ্ধির খবরে গত সপ্তাহে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের শেয়ারে আগ্রহ ছিল বিনিয়োগকারীদের। ফলে এ খাতের শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি বৃদ্ধি পায়।
গত সপ্তাহে ডিএসইর লেনদেনের তথ্য বিশ্লেষণ করে পাওয়া গেছে এমন তথ্য। গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৫টি সিকিউরিটিজ লেনদেনে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে দর বৃদ্ধি পায় ১৫৯টির বা ৪৪ দশমিক ৭৯ শতাংশ, কমেছে ১৭২টির বা ৪৮ দশমিক ৪৬ শতাংশ, অপরিবর্তিত ছিল ২৩টির ও লেনদেন হয়নি একটির। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমে আসায় আগের সপ্তাহের চেয়ে লেনদেন কমেছে ডিএসইতে।
তথ্য অনুযায়ী, এই সময়ে ডিএসইতে লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে ১৮ দশমিক ৪৫ শতাংশ কমেছে। শেয়ারদর তথ্য বলছে, তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজের মধ্যে আর্থিক খাতের শেয়ারদরে মিশ্র প্রবণতা দেখা গিয়েছে। এর মধ্যে মিউচুয়াল ফান্ডগুলো সর্বোচ্চ দুই দশমিক ৮৫ শতাংশ গেইনারে ছিল। একই ধারা দেখা গিয়েছে ব্যাংক খাতের শেয়ারদরেও। খাতটি এক দশমিক শূন্য ছয় শতাংশ গেইন করেছে শেয়ারদরে। অন্যদিকে জীবন বিমা সর্বোচ্চ পাঁচ দশমিক ৩৫ শতাংশ লোকসান গুনেছে। একই সঙ্গে শূন্য দশমিক শূন্য তিন শতাংশ লোকসান দিয়েছে সাধারণ বিমা খাতের শেয়ারদরও।
অ-আর্থিক খাতের সিকিউরিটিজের মধ্যে সবগুলোই ইতিবাচক ধারায় লেনদেন শেষ করে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি এক দশমিক ৮৫ শতাংশ গেইন করে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের শেয়ারদর। পাশাপাশি টেলিকম খাত এক দশমিক ৫২ শতাংশ, প্রকৌশল খাত শূন্য দশমিক ৮৬ শতাংশ, ওষুধ খাত শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ গেইন করে।
লেনদেনের খাতভিত্তিক তথ্যে পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ডিএসইর মোট লেনদেনের গত সপ্তাহে সবচেয়ে বেশি ১২ শতাংশ অবদান রাখে বস্ত্র, ওষুধ ও সাধারণ বিমা খাত। এছাড়া ১১ শতাংশ অবদান রেখেছিল প্রকৌশল খাত। অন্যান্য খাতের মধ্যে ব্যাংক ৯ শতাংশ, ট্যানারি তিন শতাংশ, টেলিকম খাত তিন শতাংশ, মিউচুয়াল ফান্ড দুই শতাংশ, আইটি খাত তিন শতাংশ, জীবন বিমা খাত তিন শতাংশ, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত ৯ শতাংশ এবং খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাত চার শতাংশ রাখে।
একক কোম্পানি হিসেবে গত সপ্তাহের লেনদেন শেষে গেইনারের শীর্ষে রয়েছে প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড। কোম্পানিটির ইউনিট দর গত সপ্তাহে ২৩ দশমিক ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এরপরই রানার অটোমোবাইল। কোম্পানিটির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে ১৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। এছাড়া এনলিমা ইয়ার্ন ডায়িংয়ের শেয়ারদর ১০ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ন্যাশনাল পলিমার ইন্ডাস্ট্রিজের ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ, জেনেক্স ইনফোসিস ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ শেয়ারদর বৃদ্ধি পায়।
অন্যদিকে আলোচিত সময়ে দরপতনের শীর্ষে রয়েছে আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেড। কোম্পানিটি সপ্তাহ শেষে দর হারিয়েছে ১৮ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এরপরই দর হারানোর তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড। কোম্পানিটি সপ্তাহ শেষে ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ দর হারিয়েছে। এ সময়ে ১৬ দশমিক ৭৪ শতাংশ দর হারিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস।
