প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

সাতক্ষীরায় গরমে বেড়েছে তালশাঁস বিক্রি

সৈয়দ মহিউদ্দীন হাশেমী, সাতক্ষীরা: গ্রীষ্মের পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ একটি ফলের নাম হলো তালের শাঁস। প্রচণ্ড গরমে এ ফলটি শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে খুবই প্রিয়। বৈশাখ থেকে জ্যৈষ্ঠের অর্ধেক পর্যন্ত এ দেড় মাস চলে তালের শাঁস বিক্রির কাজ। বিক্রেতারা স্থানীয়ভাবে এগুলো সংগ্রহের পাশাপাশি দেশের নানা জায়গা থেকে আমদানিও করেন। এ ফল খেতে শুধু সুস্বাদুই নয়, এতে রয়েছে অবিশ্বাস্য পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা। তালের শাঁসের গুণাগুণ সম্পর্কে পুষ্টিবিদদের মতে, ১০০ গ্রামের একটি তালের শাঁসের ৯২ দশমিক ৩ শতাংশই থাকে জলীয় অংশ, ক্যালরি থাকে ২৯, শর্করা ৬ দশমিক ৫ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, খনিজ শূন্য দশমিক ৫ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন-সি ৪ মিলিগ্রাম। মৌসুমি ফল হিসেবে তালশাঁস মানবদেহকে বিভিন্ন রোগ থেকে দূরে রাখে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়।

গতকাল শনিবার সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন হাটবাজার, রাস্তাঘাট, বাসস্ট্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে দেখা গেছে সুস্বাদু এ ফলটির বিক্রেতারা হাঁসুয়া বা ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাল কেটে তালের শাঁস বের করছেন, আর ক্রেতারাও অনেক আগ্রহ নিয়ে এ ফলের শ্বাস কিনছেন। মৌসুমি অনেক ফলের সঙ্গে এ ফলের কদর বেড়েছে, যার ফলে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে খেতে দেখা যায় সুস্বাদু এ তালের শাঁস।

সুলতানপুর বকুলতলা মোড়ের তালশাঁস বিক্রেতা হাসর আলী শেয়ার বিজকে বলেন, তাল যখন কাঁচা থাকে, তখন বাজারে এটি পানি-তাল হিসেবেই বিক্রি হয়। কেউ বলে তালশাঁস আবার কেউ বলে তালের চোখ, কেউ বলে তালকুরা। তিনি জানান, প্রতিটি তালের ভেতরে দুই থেকে তিনটি শাঁস থাকে এবং প্রতিটি তাল গড়ে আট থেকে ১২ টাকায় বিক্রি হয়। প্রতিটি তালের পাইকারি কেনা দাম পাঁচ থেকে ছয় টাকা। গরম পড়লে তালের শাঁস অনেক বেশি বিক্রি হয়। প্রতি বছর আমি এ মৌসুমে তালের শাঁস বিক্রি করে থাকি। তিনি জানান, প্রতিদিন তিনি পাঁচ-ছয়শটি তাল কেটে বিক্রি করেন। এবছর প্রচণ্ড দাবদাহে মানুষ শরীরের ক্লান্তি দূর করতে তালের শাঁস খাচ্ছেন। গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বিক্রি বেশি।

তালের শাঁস কিনতে আসা শেখ তৌহিদুর রহমান ডাবলু জানান, অনেক ফল যখন ফরমালিনের বিষে নীল, তখন তালের শাঁসে ফরমালিনের ছোঁয়া লাগেনি। এজন্য প্রতি বছর আমি ও আমার পরিবার এগুলো খাই। এগুলো খেতে নরম ও সুস্বাদু এবং শরীরের জন্য খুবই পুষ্টিকর।