প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জে আবারো পরিবহন ধর্মঘটের ঘোষণা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের। বৃহস্পতিবার বাস টার্মিনাল সংস্কার ও পুলিশি হয়রানির প্রতিবাদে রাত থেকে সকল ধরনের বাস চলাচল বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা করেছে সুনামগঞ্জ জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) সকালে বাস স্টেশন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৬টা থেকে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রেখে কর্মবিরতি করছেন শ্রমিকরা। এতে সুনামগঞ্জ থেকে ঢাকা, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, গাজীপুর, সিলেট ছাড়াও আন্তঃজেলা ছাতক, জগন্নাথপুর ও দিরাই রুটে কোনো ধরনের বাস, ট্রাক বা মাইক্রোবাস চলাচল করতে দেখা যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ওয়েজখালী এলাকার সড়ক থেকে শ্যামলী, মামুন ও সাকিল পরিবহনের তিনটি দূরপাল্লার বাস অবৈধ পার্কিংয়ের দায়ে জব্দ করে পুলিশ লাইন্সে এনে রাখা হয়। এরই প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের ডাক দেয় বাসচালক ও শ্রমিকরা। এরপর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট।
এদিকে যান চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গন্তব্যে যাওয়া যাত্রীরা। ব্যক্তিগত পরিবহন বা বিকল্প উপায়ে অন্যত্র যেতে চাইলে পরিবহন শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছের যাত্রীরা।
শাকিল আহমদ নামের এক যাত্রী বলেন, কোনো ধরনের পূর্বঘোষিত ঘোষণা ছাড়াই ধর্মঘটের ডাক এক ধরনের প্রহসন৷ এই ধরনের নৈরাজ্য মানা যায় না। এর স্থায়ী সমাধান না হলে যাত্রীরা জিম্মি হয়ে পড়বে।
লিমন নামে এক যাত্রী বলেন, আমি জামালগঞ্জ থেকে আসছি সিলেট যাব। হাসপাতালে আমার স্ত্রী রয়েছে। এখন হঠাৎ এসে শুনি ধর্মঘট।
এদিকে, শ্রমিক নেতাদের অভিযোগ, জেলা কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের সংস্কার না করে সড়কের পাশে পার্কিং করা বাস জব্দ করায় এবং শ্রমিকদের হয়রানি করায় এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছেন তারা।
সুনামগঞ্জ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি বুরহান উদ্দিন বলেন, জব্দ করা আমাদের গাড়িগুলো ফেরত না পাওয়া পর্যন্ত পরিবহন ধর্মঘট চলবে।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) এহসান শাহ্ বলেন, ‘সড়কের ওপরে বাস রাখলে জনগণের ভোগান্তি হয়। প্রতি আইনশৃঙ্খলা সভাসহ বিভিন্ন সভায় এ বিষয়টি বারবারই আলোচনা হয়। ‘তাই ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনটি বাস পুলিশ লাইনসে এনে রাখা হয়েছে। এটিকে ইস্যু করে ধর্মঘট ডেকে জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলা যুক্তিযুক্ত হবে না।’