জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : সৌদি আরবে আটকে থাকা হজ এজেন্সিগুলোর প্রায় ৩৮ কোটি টাকা ফেরত আনা হয়েছে বলে জানান ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। একই সঙ্গে তিনি জানান, আমার কোনো অপরাধ নেই, তাই আমার সেইফ এক্সিটের কোনো প্রয়োজন নেই।
সচিবালয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের গতকাল সোমবার তিনি এসব তথ্য জানান।
ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, মাসার নুসুক প্ল্যাটফর্মের আইবিএএন হিসাব থেকে ৯৯০টি হজ এজেন্সির অব্যয়িত ৩৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ফেরত আনা হয়েছে। এ অর্থ ইতোমধ্যে বাংলাদেশ হজ অফিসের সৌদি ফ্রান্সি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, একটি এজেন্সির অনুকূলে সর্বোচ্চ ফেরত এসেছে ৪৫ লাখ টাকা এবং সর্বনিম্ন ২ টাকা। তিনটি এজেন্সির কোনো অব্যয়িত অর্থ ছিল না, তবে ১৫৬টি এজেন্সির ব্যাংক তথ্য না থাকায় তাদের টাকার জন্য তথ্য চাওয়া হয়েছে।
ড. খালিদ হোসেন বলেন, বিগত কয়েক বছরের জমে থাকা এই অর্থ ফেরত আনা ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সদিচ্ছা ও সুশাসনের প্রতিফলন। আমরা দেশের হজ ব্যবস্থাপনাকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশি হজযাত্রীদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে হজ পালন করেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টাকে ডিউ লেটার দিয়েছি, যাতে কওমি মাদরাসার দাওরা হাদিস সনদপ্রাপ্তরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে পারে।
তিনি বলেন, যাদের দাওরা হাদিসের সনদ আছে, তারা ধর্ম ও বাংলা উভয় বিষয়েই দক্ষ। তাদের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিলে প্রাথমিক শিক্ষায় ধর্মীয় মূল্যবোধের চর্চা আরও জোরদার হবে। তবে তিনি পরিষ্কার করে বলেন, এই বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারভুক্ত।
হেফাজতে ইসলাম সংগীত শিক্ষকের পরিবর্তে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানিয়েছে, কিন্তু এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়।
সেইফ এক্সিট প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, আমার কোনো অপরাধ নেই, আমি রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরি করিনি, কাউকে চুরি করতেও সহায়তা করিনি। অতএব আমার কোনো অপরাধ না থাকলে আমি কেন সেইফ এক্সিটের জন্য পাগল হবো? আমি এদেশের নাগরিক, আমি এ দেশেই থাকব।
তিনি আরও বলেন, আমরা একটি সংকটময় সময়ে দায়িত্ব নিয়েছিলাম। তখন রিজার্ভ ছিল ২০ বিলিয়ন ডলার, এখন তা ৩২ বিলিয়নের বেশি। আইন-শৃঙ্খলাসহ সবকিছু এখন সহনীয় পর্যায়ে এসেছে।
রাজনৈতিক সম্পর্ক নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার মনে হয় না কোনো দূরত্ব তৈরি হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে অনেকে নানা কথা বলেন, কিন্তু আমাদের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ভালো। আমরা সবাই মিলে দেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে কাজ করছি।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের হজ, মাদরাসা শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রশাসনকে আরও আধুনিক ও স্বচ্ছ করা। ২০২৫ সালের যে হজ ব্যবস্থাপনা সবাই প্রশংসা করেছেন, আমরা চাই সেই ধারাবাহিকতা বজায় থাকুক।
প্রিন্ট করুন





Discussion about this post