প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

স্মরণীয়-বরণীয়

খ্যাতিমান চিত্রশিল্পী ও শিক্ষক কাজী আব্দুল বাসেতের আজ ৮৭তম জন্মবার্ষিকী। বাংলাদেশের চিত্রকলাকে আধুনিকতায় উন্নীত করার ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালনকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম। তার নিরীক্ষামূলক ‘ফিশ ওম্যান’ শীর্ষক চিত্রকর্মের জন্য তিনি সম্মান অর্জন করেন। কাজী আবদুল বাসেত ১৯৩৫ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক নিবাস মুন্সীগঞ্জ জেলার রামপাল গ্রামে। তিনি ঢাকার সরকারি মুসলিম হাইস্কুল থেকে ১৯৫১ সালে প্রবেশিকা এবং ১৯৫৬ সালে ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চারুলায় স্নাতক কোর্স শেষে ঢাকার নবাবপুর সরকারি হাইস্কুলে চারুকলার শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৫৭ সালে তিনি ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। কাজী বাসেত ১৯৬৩-৬৪ সালে  ফুলব্রাইট ফেলোশিপের অধীনে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চিত্রশিল্পে উচ্চতর শিক্ষা লাভ করন। উচ্চতর শিক্ষা শেষে তিনি ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে ড্রয়িং ও পেইন্টিং বিভাগের প্রধান হন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত  চারুকলা ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি চারুকলার মূর্ত ও বিমূর্ত দুই ধারাতেই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা গ্রহণকালে তিনি বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারায় প্রভাবিত হন। শিকাগোতে তিনি শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন পল উইগার্ড, হ্যান্স হফম্যান ও বাবভিক্টের মতো ব্যক্তিত্বদের। নারী অবয়ব, বিশেষত মাতৃরূপ অঙ্কনে তার বিশেষ আগ্রহ দেখা যায়। বাংলাদেশে বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারার শিল্প রচনাতেও তিনি অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। শিল্পীজীবনের শুরুতে তিনি অ্যাকাডেমিক রীতি অনুসরণ করে অবয়বধর্মী কাজে দক্ষতা অর্জন করেন। তিনি জলরং, তেলরং, প্যাস্টেলসহ নানা মাধ্যমে চিত্র রচনা করেছেন, ব্যবহার করেছেন ছাপচিত্রের বিভিন্ন মাধ্যমকেও। রেখাচিত্রেও তিনি দেখিয়েছেন পারদর্শিতা। কাজী আবদুল বাসেত ১৯৮২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৭ সালে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণপদক, ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ চারুশিল্প সংসদ সম্মাননা এবং ১৯৯১ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন। তিনি ২০০২ সালের ২৩ মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা