প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

স্মরণীয়-বরণীয়

বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রখ্যাত গীতিকার, সুরকার ও সংগীত পরিচালক আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা ও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন। পরবর্তী সময়ে ২০১৩ সালের ৯ মার্চ আততায়ীরা খুন করে তার ছোট ভাই মিরাজকে। এরপর প্রায় ছয় বছর অনেকটা গৃহবন্দির মতো ছিলেন তিনি। ২০১৯ সালের এই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। সংগীতে অবদানের জন্য তিনি একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হন। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৫৬ সালের ১ জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি ভারতের আগরতলায় প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। ঢাকায় ফিরে ‘ওয়াই (ইয়াং) প্লাটুন’ নামে একটি গেরিলা দল গঠন করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি স্বাধীনতা যুদ্ধে দুই নম্বর সেক্টরে আবু তাহের মোহাম্মদ হায়দারের অধীনে যুদ্ধ করেন। যুদ্ধ চলাকালে তিনি একাধিকবার পাকিস্তানি বাহিনী ও শান্তি কমিটি দ্বারা নির্মম নির্যাতনের শিকার হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিবাহিনী রমনা থানা থেকে আহতাবস্থায় তাকে উদ্ধার করে। আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭৬ সাল থেকে নিয়মিত সংগীত পবিবেশনায় যুক্ত হন। ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ সিনেমায় সংগীত পরিচালনা করেন। ১৯৮৪ সালে তিনি বেলাল আহমেদের পরিচালিত ‘নয়নের আলো’ চলচ্চিত্রের গীত রচনা ও সংগীত পরিচালনা করেন। তার রচিত ‘আমার সারাদেহ খেয়োগো মাটি’, ‘আমার বাবার মুখে’, ‘আমার বুকের মধ্যেখানে’, ‘আমি তোমার দুটি চোখের দুটি তারা হয়ে’ গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়। তিনি স্বাধীনভাবে গানের অ্যালবাম তৈরি করেন। সংগীত পরিচালনা করেছেন ৩০০-এর বেশি সিনেমায়। তার রচিত আরও গানের মধ্যে ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না, একাত্তরের মা জননী, জীবন ফুরিয়ে যাবে ভালোবাসা ফুরাবে না জীবনে, আমি জীবন্ত একটা লাশ, অনেক সাধনার পরে, তোমায় দেখলে মনে হয় হাজার বছর আগেও বুঝি ছিল পরিচয়’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তিনি ২০০১ সালে ‘প্রেমের তাজমহল’ ও ২০০৫ সালে ‘হাজার বছর ধরে’ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা