প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

স্মরণীয়-বরণীয়

ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর ৭৫তম মৃত্যু দিবস আজ। ১৯৪৮ সালের ৩০ জানুয়ারি দিল্লির বিড়লা ভবনে যাওয়ার পথে তিনি হিন্দু মৌলবাদী নাথুরাম বিনায়ক গডসের গুলিতে  নিহত হন।  গান্ধী ভারত ও বিশ্বজুড়ে মহাত্মা (মহান আত্মা) এবং বাপু (বাবা) নামে পরিচিত। ভারত সরকার তাকে ভারতের জাতির জনক হিসেবে ঘোষণা করেছে। জাতিসংঘ কর্তৃক মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন ২ অক্টোবরকে আন্তর্জাতিক অহিংস দিবস হিসেবে পালন করা হয়। মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধী ১৮৬৯ সালের ২ অক্টোবর ভারতের গুজরাটের পোরবন্দরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৮৮৭ সালে তিনি রাজকোট হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৮৮৮ সালে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য তিনি ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে ভর্তি হন। তিনি খ্রিষ্ট, বৌদ্ধ, ইসলামসহ অন্যান্য ধর্ম সম্পর্কে পড়াশোনা করেন। ১৮৯১ সালে তিনি ব্যারিস্টারি পাস করে ভারতে ফিরে আইন ব্যবসা শুরু করেন। ১৮৯৩ সালে তিনি দাদা আবদুল্লাহ অ্যান্ড সন্সের আইনজীবী হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান। প্রায় ২১ বছর তিনি সেখানে আইন ব্যবসা করেন। সেখানে তিনি ভারতীয় ও কৃষ্ণাঙ্গদের প্রতি সাধারণভাবে প্রচলিত বৈষম্যের শিকার হন। সে সময় তিনি দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের অধিকার নিয়ে ‘অহিংস সত্যাগ্রহ সংগ্রাম’ আন্দোলন করেন। ১৯১৫ সালের তিনি ভারতে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি দুস্থ কৃষক এবং দিনমজুরকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্যমূলক কর আদায় ব্যবস্থা এবং বহুবিস্তৃত বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলেন। ১৯২১ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নির্বাহী দায়িত্ব লাভ করেন। তিনি অভিজাত শ্রেণির সংগঠন থেকে কংগ্রেসকে জনগণের পার্টিতে রূপ দেন। পরবর্তীকালে তিনি কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হন। গান্ধী ভারতে সত্যাগ্রহ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৩০ সালের ১২ মার্চ তারই নেতৃত্বে ভারতে সত্যাগ্রহের মাধ্যমে ইংরেজ স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জনসাধারণ  অভিমত প্রকাশ করেন। ভারতবর্ষে দারিদ্র্য দূরীকরণ, নারী স্বাধীনতা, বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে ভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠা, বর্ণবৈষম্য দূরীকরণ, জাতির অর্থনৈতিক সচ্ছলতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রচার শুরু করেন। রাজনৈতিক কারণে তিনি বেশ কয়েকবার  আটক ও কারাভোগ করেন। ১৯৩০ সালে  তিনি ভারতীয়দের লবণ করের প্রতিবাদে ৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ডান্ডি লবণ কুচকাওয়াজে নেতৃত্ব দেন, যা পরে ভারত ছাড় আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটায়।

কাজী সালমা সুলতানা