প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

স্মরণীয়-বরণীয়

রন্ধনশিল্পী ও পুষ্টিবিদ অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীরের একাদশ মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি মনে করতেন ‘রান্না কেবল নেহাত প্রয়োজন নয়, এটি একটি শিল্প’। রান্নাকে শিল্পের মর্যাদায় উন্নীত করতে তিনি নিরলস কাজ করেন। সিদ্দিকা কবীর ১৯৩১ সালের ৭ মে পুরান ঢাকার মুকিমবাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ইডেন কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি ভিকারুন্নিসা স্কুলে শিক্ষিকা হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৫৬ সালে তিনি ইডেন গার্লস কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়তে যান। সেখান ১৯৬৩ সালে তিনি খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধপূর্ব তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসেবে খণ্ডকালীন চাকরিতে যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, আজিমপুর, ঢাকা’র সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানীন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরে বাইরে’ নামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন। টেলিভিশনে  রান্না ও পুষ্টি বিষয়ক দীর্ঘদিন ধরে তার অংশগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানে প্রচারিত ‘সিদ্দিকা কবীর’স রেসিপি’ অনুষ্ঠানটি তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার ‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রীত বইগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। তার রচিত গ্রন্থের মধ্যে রান্না খাদ্য পুষ্টি, খাবার-দাবার কড়চা, পুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী রান্না (সম্পাদনা) উল্লেখযোগ্য। এছাড়া তিনি ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৯৭ সালে তিনি দৈনিক জনকণ্ঠে ‘রসনা’ নামে কলাম লিখেন, যা পরে ‘খাবার দাবারের কড়চা’ নামে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রীত বইগুলোর মধ্যে তার রচিত ‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটি অন্যতম। ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

কাজী সালমা সুলতানা