প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

৩০ বছরের আবাস ছেড়ে ভাড়া বাড়িতে ড. ইউনূস

নিজস্ব প্রতিবেদক: ত্রিশ বছরের আবাস ছেড়ে এবার ভাড়া বাড়িতে উঠলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গত বুধবার মিরপুরের গ্রামীণ ব্যাংক ভবন ছেড়ে গুলশানের ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন নোবেল বিজয়ী এ অর্থনীতিবিদ।

গত বুধবার ইউনূসের ভবন ছেড়ে যাওয়ার কিছু ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন ইউনূস সেন্টারের মহাব্যবস্থাপক এমএফএম আমির খসরু।

তথ্যমতে, ঢাকার মিরপুর-২ নম্বরে বহুতল গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়। গ্রামীণ ব্যাংক ভবন কমপ্লেক্সের মধ্যেই পাঁচতলা করে আরও তিনটি ভবন আছে, যার একটি আবাসিক। সেখানেই এত দিন থাকতেন ড. ইউনূস।

গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে তাকে অপসারণ করা হয়েছে প্রায় ছয় বছর আগে। অপসারণের দীর্ঘদিন পর তিনি পুরোনো আবাসেই অবস্থান করছিলেন। ওই আবাসিক ভবনের নিচতলায় স্ত্রী-কন্যাসহ থাকতেন মুহাম্মদ ইউনূস। গত বুধবার এ ভবন ছেড়ে গুলশানের একটি ভাড়া বাড়িতে উঠেছেন তিনি। এছাড়া তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান ইউনূস সেন্টারের কার্যালয়ও গ্রামীণ ব্যাংক ভবনে।

তার ভবন ছেড়ে যাওয়ার বিষয়ে আমির খসরু তার ফেসবুকে লিখেছেন, গত ৩০ বছর ধরে গ্রামীণ ব্যাংক কমপ্লেক্সে বাস করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি গ্রামীণ ব্যাংককে নিজের সন্তানের মতো গড়েছেন। এমনকি তিনি যখন দেশের বাইরে ছিলেন তখনও এখানে যেন তার উপস্থিতি অনুভব করা যেত। তিনি অনেক আগেই এখান থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও গ্রামীণ পরিবারের অনুরোধে  পারেননি। কিন্তু আমরা আর তাকে ধরে রাখতে পারলাম না। আমাদের সবাইকে চোখের জলে ভাসিয়ে তিনি আজ নতুন বাসায় চলে গেলেন।

জানা গেছে, গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে এ ভবন ছেড়ে যান ইউনূস। ওই ভবন ছাড়ার সময় ছোট একটি অনুষ্ঠানে সবার উদ্দেশে বক্তব্যও দেন তিনি। ইউনূস যে ভবনে থাকতেন, তার বেশিরভাগ আবসবাবপত্র গ্রামীণ ব্যাংক থেকে সরবরাহ করা হয়েছিল। যে কারণে তিনি হাতে গোনা কিছু আসবাব নিয়েছেন যেগুলো তিনি কিনেছিলেন। মেয়ের অনুরোধেই তিনি এখানে কোনো অসুবিধা না থাকলেও গুলশানে বাসা ভাড়া নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার কারণ দেখিয়ে ২০১১ সালের ২ মার্চ গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদ থেকে ইউনূসকে অপসারণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়েও হেরে যান তিনি। এর পর থেকে সরকারের সঙ্গে নোবেলজয়ী এ বাংলাদেশির সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যও এসেছে বিভিন্ন সময়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সাবেক শিক্ষক ড. ইউনূস গত শতকের আশির দশকে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গ্রামীণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্বে ছিলেন। এ দায়িত্ব পালনের মধ্যেই ২০০৬ সালে নোবেল পুরস্কার পান তিনি।

ব্যাংকটির ৩০ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা সরকারের হাতে।