নিজস্ব প্রতিবেদক : অনলাইনে পণ্য বিক্রিতে প্রতারণা করলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ডিজিটাল বাণিজ্য কর্তৃপক্ষ অধ্যাদেশ করতে যাচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকার। অধ্যাদেশ পাস হলে কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রসার, শৃঙ্খলা রক্ষা, বাণিজ্যবিরোধ নিষ্পত্তি ও অপরাধ প্রতিরোধের তদারক করবে ওই কর্তৃপক্ষ।
অধ্যাদেশটির খসড়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে তিনি সেটি অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করাবেন। পাস হলে তা যাবে ‘আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদানসংক্রান্ত কমিটি’র বৈঠকে।
যা আছে অধ্যাদেশে: মিথ্যা তথ্য দিয়ে পণ্য বিক্রি করলে অনলাইন বিক্রেতাকে দুই বছরের কারাদণ্ড, অনাদায়ে ১০ লাখ টাকা জরিমানা, অথবা উভয় দণ্ড দেয়ার বিধান রাখা হয়েছে ওই অধ্যাদেশে। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ে পণ্য বা সেবা সরবরাহ না করলে মূল্যের কয়েকগুণ জরিমানা আরোপ করা হবে। নিষিদ্ধ পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রেও থাকছে বড় অঙ্কের জরিমানার বিধান।
অধ্যাদেশের খসড়ায় বলা হয়েছে, অনুমতি ছাড়া ডিজিটাল বা গিফট কার্ড, ওয়ালেট ও ক্যাশ ভাউচার করা যাবে না। করলে জরিমানা গুনতে হবে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে লটারির আয়োজন করলেও গুনতে হবে বড় অঙ্কের জরিমানা।
খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘ডিজিটাল বাণিজ্য’ বলতে যেকোনো ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনে পণ্য ও সেবা কেনাবেচা বোঝাবে। অনলাইনে কেনাবেচাযোগ্য পণ্য বা সেবা প্রদর্শিত বা ঘোষিত হতে হবে এবং মূল্য পরিশোধ করার ব্যবস্থা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। আর ‘ডিজিটাল বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান’ বলতে বোঝানো হবে অনলাইনে নিজস্ব নামে বা নিজস্ব পরিচালনায় ওয়েবসাইট, মার্কেটপ্লেস বা অন্য কোনো ডিজিটাল মাধ্যমে এককভাবে বা যৌথভাবে অনলাইনে পণ্য বা সেবা বিক্রি করবে বা বিক্রি করার জন্য প্রদর্শন বা ঘোষণা দেবেÑএ ধরনের নিবন্ধিত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ই-কমার্স খাতের বিকাশ এবং এ খাতকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনার জন্য এ অধ্যাদেশ গঠন করা হচ্ছে। অধ্যাদেশ পাস হলে কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে। ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রসার, শৃঙ্খলা রক্ষা, বাণিজ্যবিরোধ নিষ্পত্তি ও অপরাধ প্রতিরোধের তদারক করবে এ কর্তৃপক্ষ।
ওই কর্তৃপক্ষ থেকে লাইসেন্স নিয়ে দেশে ই-কমার্স বা ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া ব্যবসা করা যাবে না। ডিজিটাল কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানগুলোর ডিজিটাল বিজনেস আইডেনটিটি (ডিবিআইডি) নিবন্ধন দেবে এ কর্তৃপক্ষ। তবে প্রতারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন বাতিল করে দেবে।
কর্তৃপক্ষ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা করবে। একজন নির্বাহী চেয়ারম্যান ও চারজন সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত হবে এ কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে বাণিজ্যমন্ত্রী, বাণিজ্য উপদেষ্টা বা বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীকে প্রধান করে গঠন করা হবে উপদেষ্টা পরিষদ।