Print Date & Time : 27 August 2025 Wednesday 4:48 am

অন্তর্বর্তী সরকার নিঃসন্দেহে নিরপেক্ষ সরকার : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নিঃসন্দেহে একটি নিরপেক্ষ সরকার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ রোববার (২৪ আগস্ট) নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৮১তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে জিয়া পরিষদ আয়োজিত রিকশা ও ভ্যান চালকদের মধ্যে রেইনকোট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার চাওয়া নিয়ে শেখ হাসিনার বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা কতখানি দ্বিচারী হতে পারেন, যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জ্বালাও-পড়াও ও ধ্বংসাত্মক আন্দোলন করে ক্ষমতায় এসে নিজেই সেই ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছেন। এই হচ্ছে শেখ হাসিনা, যার কোনো ওয়াদা, অঙ্গীকার নেই।

বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে মানুষের অনেক দাবি-দাওয়া। আমাদের প্রত্যাশা শান্তি, স্বস্তি থাকবো। মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত, সেখানে ন্যায় বিচার পাবে। সরকারের আন্তরিকতা কম সেটা বলবো না। আজকে আর্থিক ক্ষেত্রে মুদ্রাস্ফীতি অনেক কমে আসছে। জিনিসপত্রের দাম এখনো কমছে না, কর্মসংস্থান হচ্ছে না। একের পর এক কল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। কর্মসংস্থান না থাকলে দুর্ভিক্ষের আলামত তৈরি হয়।

তিনি আরও বলেন, আপনাদের উপদেষ্টা হাঁসের মাংস যে কোনো জায়গায় খেতে পারবে, কিন্তু জনগণ তো হাঁসের মাংস খেতে পারবে না।

কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রচেষ্টা সরকারকে নিতে হবে বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, মানুষ বেকার থাকলে দুর্ভিক্ষের পতন ধ্বনি শোনা যাবে।

সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, জুলাই সদনের জন্য সুপারিশ আসবে, কিন্তু সেটার জন্য আইন ও সংবিধান সংশোধন করতে হয় তা নির্বাচিত সংসদ করবে। একটি রাজনৈতিক দল বলছেন, আগেই গণভোট দিতে হবে, কেন? যদি মূল নীতিমালায় কোনো পরিবর্তন করতে হয়, মূল নীতিমালা অখণ্ড বিষয়, সেটা সংশোধন করা যায়, তবে সেটা করবে সংসদ। কিন্তু শেখ হাসিনার মতো যদি হয়, প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আমার মতের মিল হয়নি, তাই তাকে গোয়েন্দা সংস্থার লোক পাঠিয়ে পিস্তল ঠেকিয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। ওই ধরনের বৈশিষ্ট্য এবং আলামত এখন কেন থাকবে? যেই নিয়ম শেখ হাসিনা ভেঙেছে, সেটা তো আবার চালু করতে পারি না।

রিজভী আরও বলেন, অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন, তারা দেশের এবং গণতন্ত্রের স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করতে হলে করবে। সেটা তাদের দায়িত্ব। কিন্তু আগে সেটা মানতে হবে, করতে হবে? যেসব সংস্কারে সব ঐকমত্য হয়েছে তার একটা সুপারিশ থাকবে, সেটা নির্বাচিত সংসদ সংশোধন করবে, আইনি ভিত্তি দেবে। সেটা না করে আগেই তালগাছ আমার বলে চিৎকার করতে থাকি..।

ফ্যাসিবাদী শক্তি প্রশাসনে এখনও ঘাপটি মেরে বসে আছে, তারা সুযোগ পেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও জনগণের বিরুদ্ধে কাজ করবে। আজকে সবাই বলছে, ফ্যাসিবাদী শক্তি সচিবালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় বসে আছে, তারা বিভ্রান্তি তৈরি করার জন্য কাজ করছেন।

রেইনকোট বিতরণ অনুষ্ঠানে জিয়া পরিষদের ভাইস- চেয়ারম্যান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আরো উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের মহাসচিব প্রফেসর ড.এমতাজ হোসেন, যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহিল মাসুদ, কৃষিবিদ মনোয়ারুল ইসলাম এনাম, প্রকৌশলী মো. শরীফুজ্জামান খান শরীফ, প্রফেসর ড. মো. নেসার উদ্দিন তালুকদার প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব নূরনবী খান, শেরেবাংলা থানা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর রেজা, সহসভাপতি এস এম কবির, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদসহ জিয়া পরিষদের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নেতা।