শেয়ার বিজ ডেস্ক : গত বছর বিশ্বের বৃহত্তম অস্ত্র উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর অস্ত্র এবং সামরিক পরিষেবা বিক্রির রাজস্ব ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ইউক্রেন ও গাজায় যুদ্ধ এবং বিভিন্ন দেশের সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি এই চাহিদাকে উৎসাহিত করেছে বলে সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। খবর: এপি।
স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট (সিপ্রি) বলেছে, ১০০টি বৃহত্তম অস্ত্র প্রস্তুতকারক সংস্থার রাজস্ব ২০২৪ সালে বেড়ে ৬৭৯ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা তাদের রেকর্ড করা সর্বোচ্চ আয়।
রাজস্ব বৃদ্ধির বেশিরভাগই এসেছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানিগুলো থেকে। তবে এশিয়া ও ওশেনিয়া ছাড়া বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলেই অস্ত্র বিক্রি বৃদ্ধির খবর দেখা গেছে। চীনা অস্ত্রশিল্পে সমস্যার কারণে এশিয়া ও ওশেনিয়ায় বিক্রি কিছুটা কম হয়েছিল।
অস্ত্র নির্মাণে শীর্ষ ১০০-এর মধ্যে থাকা ৩৯টি মার্কিন সংস্থার মধ্যে ৩০টিতেই আয় বেড়েছে। এর মধ্যে লকহিড মার্টিন, নর্থরপ গ্রুমান এবং জেনারেল ডাইনামিকস অন্তর্ভুক্ত। তাদের সম্মিলিত রাজস্ব ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৩৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। তবে সিপ্রি উল্লেখ করেছে যে, এফ-৩৫ ফাইটার জেটের মতো মার্কিন-নেতৃত্বাধীন কর্মসূচিতে ব্যাপক বিলম্ব ও বাজেট ছাপিয়ে যাওয়ার ঘটনা এখনো ঘটছে।
রাশিয়া বাদে ইউরোপের ২৬টি সংস্থার মধ্যে ২৩টির অস্ত্র রাজস্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধ ও রাশিয়া-সংক্রান্ত নিরাপত্তা শঙ্কায় মহাদেশজুড়ে সামরিক ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের মোট আয় ১৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫১ বিলিয়ন ডলারে।
বিশেষ করে উল্লেখযোগ্য লাভ করেছে চেক রিপাবলিকের চেকোস্লোভাক গ্রুপ, যার রাজস্ব বেড়েছে ১৯৩ শতাংশ। মূলত ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ সংগ্রহ প্রকল্পের কারণে এ বিশাল বৃদ্ধি ঘটেছে। ইউক্রেনের জেএসসি ইউক্রেনিয়ান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রির আয়ও ৪১ শতাংশ বেড়েছে।
ইউরোপীয় সংস্থাগুলো বর্ধিত চাহিদা মেটাতে নতুন উৎপাদন ক্ষমতায় বিনিয়োগ করছে। কিন্তু সিপ্রি গবেষক জেড গুইবার্টু রিকার্ড এক বিবৃতিতে সতর্ক করেছেন যে, ‘কাঁচামাল সংগ্রহ একটি ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে।’ এ সতর্কতার কারণ মূলত চীনা রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার বিশেষত চীনের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ রপ্তানি সীমাবদ্ধতার কারণেই মূলত এ সতর্কতা।
সিপ্রির তালিকায় থাকা রাশিয়ার দুটি সংস্থা রোস্টেক ও ইউনাইটেড শিপবিল্ডিং করপোরেশন নিষেধাজ্ঞার কারণে যন্ত্রাংশের ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও অস্ত্র রাজস্বে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি দেখেছে, যা সম্মিলিতভাবে ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। তবে দক্ষ শ্রমিক সংকট একটি উল্লেখযোগ্য সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
মধ্যপ্রাচ্যেও অস্ত্র রাজস্ব বেড়েছে এবং র্যাংকিংয়ে থাকা তিনটি ইসরায়েলি সংস্থার আয় ১৬ শতাংশ বেড়ে ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। সিপ্রি গবেষক জুবাইদা করিম বলেছেন, গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে বিশ্বব্যাপী সমালোচনা থাকলেও তাদের অস্ত্রের প্রতি বিভিন্ন দেশের আগ্রহ কমেনি।
এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলের অস্ত্র বিক্রির রাজস্বে ১ দশমিক ২ শতাংশ পতন দেখা গেছে, যা মোট ১৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এই পতনের প্রধান কারণ ছিল সূচকে থাকা আটটি চীনা কোম্পানির আয়ে ১০ শতাংশ হ্রাস।
প্রিন্ট করুন










Discussion about this post