শেয়ার বিজ ডেস্ক : জুলাই শহিদ আবু সাঈদের প্রথম শাহাদাতবার্ষিকী আজ। তার জন্ম ২০০১ সালে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলায় বাবনপুর গ্রামে। তার পিতার নাম মকবুল হোসেন, মায়ের নাম মনোয়ারা বেগম। ২০২৪ সালের ১৬ জুলাই কোটাবিরোধী আন্দোলন চলাকালে পুলিশের গুলিতে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আন্দোলনকারীরা তাকে আন্দোলনের প্রথম শহি বলে আখ্যায়িত করেন।
আবু সাঈদ স্থানীয় জাফরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপরে স্থানীয় খালাশপীর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাস করেন। এরপর তিনি ২০১৮ সালে রংপুর সরকারি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। পরে তিনি ২০২০ সালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন। তিনি তার বিভাগের ১২তম ব্যাচের শির্ক্ষাী ছিলেন।
আবু সাঈদ ছিলেন ২০২৪ সালের বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দলনের একজন কর্মী। তিনি রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্বব্যিালয়ের সমন্বয়ক ছিলেন। তিনি ১৫ জুলাই ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুজ্জোহাকে উল্লেখ ফেসবুকে একটি পোস্ট নে।… স্যার! (মোহাম্ম শামসুজ্জোহা), এই মুহূর্তে আপনাকে ভীষণ দরকার স্যার! মৃতুর সঙ্গে সঙ্গেই কালের গর্ভে হারিয়ে যাবেন না। …. অন্তত একজন ‘শামসুজ্জোহা’ হয়ে মরে যাওয়াটা অনেক বেশি আনন্দের, সম্মানের আর গর্বের।
১৬ জুলাই ২০২৪ দুপুর ১২টা থেকেই রোকেয়া বিশ্বব্যিালয় অঞ্চলে কোটা আন্দোলনকর্মীরা বিক্ষোভ করছিল। আবু সাঈ এই আন্দোলনের সম্মুখ ভাগেই অবস্থান করছিল সবসময়। বেলা দুপুর আড়াইটা থেকে তিনটার দিকে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ছাত্রদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। ছাত্ররে সবাই সরে গেলেও আবু সাঈ হাতে একটি লাঠি নিয়ে দুহাত প্রসারিত করে দাড়িয়ে যান।
আবু সাঈ
দুহাত প্রসারিত করে প্রতিবাদী ভঙ্গিতে পুলিশের দিকে দাঁড়িয়ে থাকাকালে পুলিশ ৫০-৬০ ফুট দূর থেকে তার ওপর ছররা গুলি ছুড়ে। একপর্যায়ে কয়েকটি গুলি খেয়ে ক্ষতবিক্ষত হওয়ার পর মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। অন্য শিক্ষার্থীরা তাকে হাসপাতালে নেয়ার আগেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আন্দোলন কর্মীরা রংপুর পার্ক মোড়ের নাম পরিবর্তন করে ‘আবু সাঈ চত্বর’ দেয়। সেই সঙ্গে শিক্ষার্থীরা রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্বব্যিালয়ের মূলগেটের নাম ‘শহিদ আবু সাঈদ গেট’ নামকরণ করে। ২৫ জুন ২০২৫ সরকার তার মৃত্যুর দিনকে শহিদ আবু সাঈদ দিবস”ঘোষণা করেছে।

Discussion about this post