শেয়ার বিজ ডেস্ক : আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা এক হাজার ৪০০ জন ছাড়িয়েছে। এদিকে এক ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নির্ণয়ের আগেই মঙ্গলবার আবারও দেশটির দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প অনুভূত হয়। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছেন, রোববারের ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত এক হাজার ৪১১ জন মানুষের প্রাণহানির তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়া আহতের সংখ্যা তিন হাজার ১২৪।
দেশটিতে গত কয়েক বছরের মধ্যে আঘাত হানা অন্যতম শক্তিশালী ওই ভূমিকম্পে অন্তত পাঁচ হাজার ৪০০ বাড়ি ধ্বংস হয়েছে বলেও জানান তিনি।
রয়টার্সকে দেয়া ভিন্ন বক্তব্যে একই দিন আফগান রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি জানায়, এখন পর্যন্ত অন্তত এক হাজার ১২৪ জন মানুষের প্রাণহানি নিশ্চিত করা গেছে। এছাড়া আহত হয়েছেন তিন হাজার ২৫১ জন আর আট হাজারের বেশি বাড়ি ধসে গেছে।
ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থল হিন্দুকুশ পর্বতমালা অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় আফগানিস্তান অন্যতম ভূমিকম্পপ্রবণ দেশ। রোববারের ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুনার ও নানগারহার প্রদেশ।
দেশটির পাহাড়ি অঞ্চলে যাতায়াত কষ্টসাধ্য হওয়ায় উদ্ধারকাজে ব্যাঘাত ঘটছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। উদ্ধারকর্মীরা বলেছেন, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও অনেক মানুষ চাপা পড়ে থাকতে পারেন। সেক্ষেত্রে হতাহতের সংখ্যা মারাত্মকভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আফগানিস্তানে দায়িত্বরত জাতিসংঘের কর্মকর্তারা।
এদিকে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোর দুর্গম অবস্থান, রাস্তাঘাটের ক্ষতি এবং পরাঘাতের কারণে ত্রাণ সরবরাহে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। সংস্থাটির তথ্যমতে, ভূমিকম্পে অন্তত ১২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
রয়টার্স প্রতিনিধিকে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, মঙ্গলবার কুনারের গ্রামগুলোতে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স যাওয়ার চেষ্টা করছিল। পাশাপাশি, আহতদের হাসপাতালে নেয়া এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেয়ার জন্য হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়।
কয়েকজন আহত ব্যক্তিকে কাবুল এবং পার্শ্ববর্তী নানগারহার প্রদেশে স্থানান্তর করা হয়েছে। ইউনিসেফ মঙ্গলবার সতর্ক করেছে যে, হাজার হাজার শিশু ঝুঁকির মুখে রয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টায় তারা ওষুধ, উষ্ণ পোশাক, তাঁবু, ত্রিপল এবং স্বাস্থ্যবিধি সামগ্রী যেমন সাবান, জীবাণুনাশক, তোয়ালে, স্যানিটারি প্যাড এবং পানির বালতি সরবরাহ করছে। এছাড়া দূষণ থেকে পানির উৎস রক্ষা করতে মৃতদেহ দ্রুত সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও জানায় জাতিসংঘ। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় নিরাপত্তা নিশ্চিত ও সহায়তার জন্য তালেবান সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে।

Discussion about this post