নিজস্ব প্রতিবেদক : বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে উঠে আসা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অটল অবস্থান এবং তাঁর নেতৃত্বের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি অভিযোগ করেছেন, ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাকে পার্শ্ববর্তী ভারত আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নাশকতা ছড়ানোর চেষ্টা করছে।
আজ রোববার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি চেয়ারপারসনের জন্মদিন উপলক্ষে জিয়া পরিষদের আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে এসব মন্তব্য করেন রিজভী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ভয়ঙ্কর নির্যাতনের মুখেও খালেদা জিয়া কখনো আদর্শচ্যুত হননি। তিনি চাইলে আপস করতে পারতেন, শেখ হাসিনাকে ছাড় দিতে পারতেন। কিন্তু তা হলে সেটা হতো জনগণের প্রতি বিশ্বাসঘাতকতা, গণতন্ত্রের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা। তিনি সেই পথ অবলম্বন করেননি, বরং মৃত্যুর সঙ্গে একাধিকবার পাঞ্জা লড়েছেন।
রিজভী উল্লেখ করেন, এরশাদের আমল থেকে শুরু করে টানা ১৬ বছর শেখ হাসিনার শাসনামলে খালেদা জিয়া দুঃসহ নির্যাতনের শিকার হলেও তাঁকে টলানো যায়নি। যে নেত্রী মৃত্যুভয়কেও জয় করেছেন, শেখ হাসিনার ভয় দেখানোও তাঁকে টলাতে পারেনি। খালেদা জিয়া জনগণের স্বার্থকেই সর্বাগ্রে রেখেছেন।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ওপর নিপীড়ন-অত্যাচার হয়েছে প্রচুর। তবুও তিনি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কটূ কথা বলেননি। অত্যন্ত নীরবে সব সহ্য করেছেন। যারা তাঁকে শেষ করে দিতে চেয়েছে, তাদের প্রতিও কখনো বিদ্বেষ প্রকাশ করেননি।
ভারতকে উদ্দেশ করে তিনি অভিযোগ করেন, ১৪০০ শিশু-কিশোরের হত্যাকারী শেখ হাসিনাকে তারা আশ্রয় দিয়েছে। এখন বাংলাদেশের ভেতরে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা চলছে। এতে বোঝা যায়, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে এবং ক্ষমতায় থাকতে ভারত কতটা সহযোগিতা করেছে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর এখন বাংলাদেশের সামনে একটি সুন্দর রাষ্ট্র গড়ার বড় সুযোগ এসেছে। কিন্তু কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থে ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে অযথা বিরোধ তৈরি করছে। আমরা যদি খালেদা জিয়ার রাজনীতি ও তাঁর ব্যক্তিগত মহত্বকে স্মরণ করি, তাহলে কোনো বিপদ বা স্বৈরতন্ত্র আমাদের দমিয়ে রাখতে পারবে না।
রিজভী তাঁর বক্তব্যে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আমাদের শক্তি জনগণ, আর আমাদের ভরসা দেশনেত্রী খালেদা জিয়া। তাঁর দেখানো পথেই এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। আমরা স্বাধীনতাকে বিক্রি করতে দেব না, সার্বভৌমত্বকে দুর্বল হতে দেব না, আর গণতন্ত্রকে কেড়ে নেওয়ার সুযোগ দেব না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুল লতিফ। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। আরও বক্তব্য রাখেন জিয়া পরিষদের মহাসচিব প্রফেসর ড. এমতাজ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আব্দুল্লাহিল মাসুদ, যুগ্ম মহাসচিব কৃষিবিদ মো. মনোয়ারুল ইসলাম এনাম, ইঞ্জিনিয়ার শরিফুজ্জামান, শেরেবাংলা থানা কমিটির সহ-সভাপতি এসএম কবির ও তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।