শেয়ার বিজ ডেস্ক : ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বর্তমান অর্থমন্ত্রী ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর নাম প্রধানমন্ত্রী পদে সুপারিশ করেছেন।
গতকাল সোমবার (১৪ জুলাই) এক বিবৃতিতে তিনি এ ঘোষণা দেন, যা ইউক্রেনের রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে—বিশেষ করে রাশিয়ার সঙ্গে চলমান আড়াই বছরের যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে। খবর আল জাজিরা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া বিবৃতিতে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি ইউক্রেন সরকারকে নেতৃত্ব দিতে এবং এর কার্যক্রম নতুনভাবে শুরু করতে ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কোর প্রস্তাব দিয়েছি। আমরা শিগগিরই নতুন সরকারের কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন দেখতে পাব বলে আশা করছি।’
জেলেনস্কি জানান, এই সুপারিশ ইউক্রেন সরকারের কার্যনির্বাহী শাখার রূপান্তর প্রক্রিয়ার অংশ। তিনি আরও বলেন, সিভিরিদেঙ্কোর সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে অর্থনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়, নাগরিকদের জন্য সহায়তা কর্মসূচির সম্প্রসারণ এবং দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানোর বিষয়ে।
৩৯ বছর বয়সী সিভিরিদেঙ্কো সম্প্রতি আলোচনায় আসেন বিরল খনিজসম্পদ সংক্রান্ত এক চুক্তিকে কেন্দ্র করে, যা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের সম্পর্কে টানাপোড়েন তৈরি করে। কিয়েভ ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার ঐ গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে তিনি সামনে আসেন এবং সংকট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
জেলেনস্কির প্রস্তাব অনুমোদন পেলে, সিভিরিদেঙ্কো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহালের স্থলাভিষিক্ত হবেন। শ্যামিহাল ২০২০ সাল থেকে ইউক্রেনের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
সিভিরিদেঙ্কোর সাবেক সহকর্মী এবং ইউক্রেনের সাবেক অর্থমন্ত্রী তিমোফি মাইলোভানভ বলেন, ‘সরকারে পরিবর্তন জরুরি, কারণ জনগণ হাঁপিয়ে উঠেছে।’ বর্তমানে তিনি কিয়েভ স্কুল অব ইকোনমিকসের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার মতে, এ ধরনের পরিবর্তন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মধ্যে নতুন উদ্যম সৃষ্টি করবে।
এর আগে গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলেনস্কি জানান, তিনি প্রতিরক্ষামন্ত্রী রুস্তেম উমেরভকে যুক্তরাষ্ট্রে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছেন। সপ্তাহ শেষে উমেরভের সঙ্গে বৈঠকের পর জেলেনস্কি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরও ইতিবাচকভাবে এগিয়ে নিতে হবে, একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা খাতে প্রয়োজন নতুন কৌশল।’
ইউলিয়া সিভিরিদেঙ্কো বর্তমানে উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার হামলার কয়েক মাস আগেই তিনি ইউক্রেনের সংকটাপন্ন অর্থনীতি পরিচালনার দায়িত্বে আসেন।
তবে তাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন। রাশিয়ার হামলার পর থেকে দেশটির সংসদের বড় অংশ জেলেনস্কির সমর্থনে রয়েছে, ফলে তার এই প্রস্তাব সহজেই গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
আরআর/

Discussion about this post