শেয়ার বিজ ডেস্ক : পাকিস্তান শুক্রবার জানিয়েছে, ইসলামাবাদে এ সপ্তাহে ঘটে যাওয়া আত্মঘাতী বোমা হামলার সঙ্গে জড়িত একটি সেলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশটির সরকার বলছে এটি আফগানিস্তান থেকে পরিচালিত হচ্ছিল।
আদালত ভবনের বাইরে মঙ্গলবার ঘটানো হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানি তালেবানের একটি শাখা তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)।
ইসলামাবাদ বলেছে, হামলায় ১২ জন নিহত ও ডজনখানেক আহত হয়েছে এবং গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা টিটিপি-সংশ্লিষ্ট।
সরকারি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এই নেটওয়ার্কটি আফগানিস্তান ভিত্তিক উচ্চ কমান্ডের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিটি ধাপে পরিচালিত হয়েছিল।’ বিবৃতিতে জানানো হয়, সেলের কথিত কমান্ডারসহ চারজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়, ‘তদন্ত অব্যাহত রয়েছে এবং আরো তথ্য ও গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা রয়েছে।’ হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করে জানানো হয়, তার নাম উসমান ওরফে কারি। তিনি আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নাঙ্গারহার প্রদেশের বাসিন্দা। তবে কোথায় থেকে গ্রেপ্তারগুলো করা হয়েছে তা জানানো হয়নি।
সিনেটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বৃহস্পতিবার বলেন, হামলাকারী আফগান নাগরিক। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইসলামাবাদে বড় ধরনের জঙ্গি হামলা খুব কমই হয়েছে, সর্বশেষ আত্মঘাতী হামলা ঘটে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।
তবে দেশটি এখন পুনরায় সহিংসতার ঢেউয়ের মুখে পড়েছে, যা কর্মকর্তাদের দাবি অনুযায়ী মূলত আফগান মাটিতে আশ্রয় পাওয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কারণে।
নকভি সোমবার দাবি করেন, এই সপ্তাহে উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানের ক্যাডেট কলেজ ওয়ানাতে হওয়া হামলায়ও আফগান নাগরিকরা অংশ নিয়েছে।
পাকিস্তানের এসব অভিযোগে আফগান তালেবান সরকার কোনো মন্তব্য না করলেও তারা উভয় হামলার ঘটনায় ‘গভীর দুঃখ ও নিন্দা’ জানিয়েছে।
সম্প্রতি একের পর এক হামলা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো অবনতি ঘটিয়েছে। গত মাসে হওয়া সাম্প্রতিকতম সীমান্ত সংঘর্ষ ছিল বহু বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ।
জাতিসংঘের হিসাবে, সেখানে ৭০ জনের বেশি প্রাণহানি ঘটে যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আফগান বেসামরিক নাগরিক।
দুই দেশ একটি নাজুক অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়েছিল, তবে কয়েক দফা আলোচনার পরও এর বিস্তারিত চূড়ান্ত করা যায়নি, প্রতিটি পক্ষ অপর পক্ষকে দোষারোপ করেছে। এই সপ্তাহের হামলাগুলো আবারও নতুন উত্তেজনার আশঙ্কা তৈরি করেছে।
পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী শহবাদ শরিফ বুধবার ইসলামাবাদের হামলাকে ‘নৃশংস সন্ত্রাসী কার্যক্রম’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তি চাই। আমরা চাই আফগানিস্তানও শান্তিতে অংশীদার হোক। পাকিস্তানের জন্য যা ভালো, আমরা মনে করি তাদের জন্যও তা ভালো, কিন্তু আমরা মিথ্যার ওপর নির্ভর করতে পারি না এবং সন্ত্রাসীদের লাগামহীন চলতে দিতে পারি না।’
এস এস/
