শেয়ার বিজ ডেস্ক : পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় ৫০টি আসন থেকে তিনটি কম থাকায় বেকায়দায় পড়েছে জাপানের ক্ষমতাসীন জোট। খবর: রয়টার্স।
জাপানের ক্ষমতাসীন জোট নির্বাচনের ফলাফলে পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটেছে একটি কট্টর ডানপন্থি জনতুষ্টিবাদী দলের, যারা বিদেশিদের ‘নীরব আগ্রাসন’-এর বিষয়ে সতর্ক করে আসছে।
গত রোববারের নির্বাচনে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার ক্ষমতাসীন জোট উচ্চকক্ষ হাউস অব কাউন্সিলরসের ২৪৮টি আসনের মধ্যে ৪৭টিতে জয় পেয়েছে। উচ্চকক্ষের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় ৫০টি আসন থেকে তিনটি কম থাকায় বেকায়দায় পড়েছে তারা।
প্রতি তিন বছরে হাউস অব কাউন্সিলরসের অর্ধেক আসনে নির্বাচন হয়। এবারও এই কক্ষের মোট আসনের অর্ধেক, অর্থাৎ ১২৪টি আসনে ভোট হয়েছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নির্বাচনের এই ফলের পর উচ্চকক্ষে ইশিবার লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (এলডিপি) ও জোট শরিক কোমিতোর মোট আসন দাঁড়িয়েছে ১২২টি।
নির্বাচনের এই ফলে প্রধানমন্ত্রী ইশিবার সংখ্যালঘু সরকারের পতন হয়তো হবে না, কিন্তু সরকারপ্রধানের ওপর মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করবে। ইশিবা গত অক্টোবরেই পার্লামেন্টের প্রভাবশালী নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছিলেন।
এমন ফলের কারণে এশিয়ার অন্যতম প্রভাবশালী অর্থনীতির দেশটি এমন এক সময় রাজনৈতিক অস্থিরতায় পড়তে যাচ্ছে, যখন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা শুল্ক কার্যকরের সময় দ্রুত ঘনিয়ে আসছে।
গত রোববার রাতে বুথফেরত জরিপ যখন তার জোটের ভরাডুবির ইঙ্গিত দিচ্ছে, তখন ইশিবা জানান, তিনি ‘আন্তরিকভাবে’ এই ‘কঠোর ফলাফল’ মেনে নিয়েছেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম এনএইচকে’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ইশিবা বলেন, ‘এটি একটি কঠিন পরিস্থিতি, আর আমাদের এটি গুরুত্বসহ এবং বিনীতভাবে মেনে নিতে হবে।’
পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর থেকে সংখ্যালঘু সরকারের নেতায় পরিণত হওয়া ইশিবা জানান, এই দুর্বল ফলাফল সত্ত্বেও তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকতে চান।
অক্টোবরে নিম্নকক্ষের নির্বাচনেও এই জোট ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ফল করেছিল। এরপর থেকে ইশিবার প্রশাসন অনাস্থা ভোটের ঝুঁকিতে রয়েছে, তার নিজের দলের ভেতরও নেতৃত্ব পরিবর্তনে ব্যাপক চাপ রয়েছে।
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, বিশেষ করে চালের দামের উল্লম্ফন ভোটারদের কাছে ছিল গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ে ব্যাপক অসন্তোষের মধ্যে জনতুষ্টিবাদী কট্টর ডানপন্থি দল সানসেইতো এবারের নির্বাচনে সবচেয়ে ভালো ফল করেছে। আগে উচ্চকক্ষে তাদের আসন ছিল মাত্র একটি, এবার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির মধ্য দিয়ে ১৪টিতে জয় পেয়েছে তারা।
সানসেইতোর ‘জাপানিরাই প্রথম’ প্রচার এবং বিদেশিদের ‘নীরব আগ্রাসন’ নিয়ে সাবধানবাণী তরুণ ভোটারদের মনে দাগ কেটেছে।

Discussion about this post