Print Date & Time : 26 August 2025 Tuesday 5:59 pm

এআইয়ের চাহিদায় ফুলেফেঁপে উঠেছে সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি টিএসএমসি

শেয়ার বিজ ডেস্ক : গত ১৭ জুলাই দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে পুরো তাইপেই নগরী স্তব্ধ হয়ে গেল। চীনের সম্ভাব্য আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষা মহড়ার অংশ হিসেবে রাজধানীজুড়ে সাইরেন বেজে উঠল। এর মাত্র আধাঘণ্টা পর শহরের কেন্দ্রস্থলের এক হোটেলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিপ নির্মাতা সংস্থা টিএসএমসির শীর্ষ কর্মকর্তারা ত্রৈমাসিক আয় বৈঠকে বসেন। যুদ্ধের আশঙ্কার মাঝেও তারা শোনালেন সুখবর: রেকর্ড লাভ, বিশ্বজুড়ে সম্প্রসারণে অগ্রগতি এবং আশাব্যঞ্জক ভবিষ্যদ্বাণী। খবর- দ্য ইকোনমিস্ট।

তাইওয়ান যখন সম্ভাব্য যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন দেশটির এই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোম্পানি নির্লিপ্তভাবে তাদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

টিএসএমসি বর্তমানে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ চিপ উৎপাদন করে, যা অন্য কোম্পানিগুলোর ডিজাইন অনুযায়ী নির্মিত হয়। বিশেষ করে স্মার্টফোন, ল্যাপটপ ও ডেটা সেন্টারের জন্য ব্যবহƒত উন্নত চিপের বাজারে তাদের শেয়ার ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে।

এআই প্রযুক্তির উত্থান তাদের ব্যবসায় নতুন গতি এনেছে। প্রায় সব এআই চিপ বিশেষত এনভিডিয়া’র তৈরি এআই অ্যাক্সেলারেটর টিএসএমসি তৈরি করে। মূলত এনভিডিয়া, এএমডি, অ্যাপল, গুগল, অ্যামাজন ও মাইক্রোসফট সবাই এখন এই তাইওয়ানিজ কোম্পানির ওপর নির্ভরশীল।

২০১৪ সালে যেখানে টিএসএমসি’র বার্ষিক রাজস্ব ছিল ২৪ বিলিয়ন ডলার, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৮৮ বিলিয়ন ডলারে। কোম্পানির বাজারমূল্য পৌঁছেছে  ১ ট্রিলিয়ন ডলারে, যা বিশ্বের একাদশ বৃহত্তম।

যদিও এতদিন তারা কেবল তাইওয়ানে উন্নত চিপ তৈরি করতো, গত পাঁচ বছরে টিএসএমসি ১৯০ বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক সম্প্র্রসারণ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে ১৬৫ বিলিয়ন ব্যয় করা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনা অঙ্গরাজ্যে, যেখানে ছয়টি উন্নতমানের ফ্যাক্টরি তৈরি করা হবে।

টিএসএমসি সবসময়ই প্রচারের বাইরে থাকতে চায়। কোম্পানির ফাইন্যান্স প্রধান ওয়েন্ডেল হুয়াং জানিয়েছেন, তারা এখনও লো-প্রোফাইল সংস্কৃতি বজায় রাখে এবং নতুন নজরদারির সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছে।

১৯৮৭ সালে প্রতিষ্ঠাতা মরিস চ্যাং এমন সময় এই কোম্পানি শুরু করেন, যখন ইন্টেল ও এএমডি’র মতো কোম্পানিগুলো নিজেরাই ডিজাইন ও চিপ উৎপাদন করতো। তিনি একটি বিপরীতধর্মী মডেল বেছে নেন: শুধুমাত্র উৎপাদনের ওপর ফোকাস করা। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে কোম্পানির আয় ৪০ শতাংশ বেড়ে পৌঁছেছে প্রায় ৬০ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে।

 

কোম্পানিটির এই প্রবৃদ্ধির পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির প্রতি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক চাহিদা।

কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও সিইও সিসি ওয়েই জানিয়েছেন, ২০২৫ সালটি কোম্পানির জন্য রেকর্ড আয়ের বছর হতে চলেছে। কারণ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক চিপের চাহিদা খুবই শক্তিশালী থাকবে বলে তারা আশা করছেন।